কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে লালমনিরহাটে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
গত চারদিনে টানা বৃষ্টিতে তিস্তার চরে কৃষকের ফসল তলিয়ে গেছে। কৃষকের ধান, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে। নদীর পানি বাড়ায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুপুর ১২টায় ব্যারাজ পয়েন্টে পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল।
নদীর পানি বৃদ্ধিতে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, সিন্দুনা, ডাউয়াবাড়ি, পাটিকাপাড়া, কালীগঞ্জের ভোটমারী, তুষভান্ডার, কাকিনা, আদিতমারীর মহিষখোচা ও সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের নদী তীরের চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সুত্র জানিয়েছে, রোববার সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ১৭ মিটার (স্বাভাবিক ৫২.১৫ মিটার)। যা বিপৎসীমার দশমিক ২ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। পানি বৃদ্ধির ফলে তিস্তার বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে, চরাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ায় রোপা আমন ধান, মরিচ ও বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে ৫ শতাধিক পুকুরে মাছ। ডুবে আছে কাঁচাপাকা রাস্তা। বাড়িতে পানি ওঠায় অনেকে গবাদি পশু নিয়ে উঁচু জায়গায় আবার কেউ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। বানভাসি মানুষজন রয়েছেন চরম দুর্ভোগে। কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলে পানি ওঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলোয় পানি উঠেছে। জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে সকল প্রস্তুতি নেয়া রয়েছে। বন্যার্তদের তালিকা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে বলেও জানান তারা।