দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া খনিতে কয়লার স্তূপ জমেছে। তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে চাহিদা কমে যাওয়া ও উত্তোলিত কয়লা মজুতের জায়গা না থাকায় এই অবস্থা। খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়লার স্তূপের কারণে তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার শঙ্কা। মাত্র এক ইউনিট চালু থাকায় কয়লার প্রয়োজনীয়তা কমেছে বলে জানিয়েছেন তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র সংশ্লিষ্টরা।
কর্তৃপক্ষ বলছেন, গ্রীষ্মের আগে তাদের কয়লা গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব নয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়ার খনি থেকে উৎপাদিত কয়লার একমাত্র গ্রাহক বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ৩টি ইউনিটে প্রতিদিন কয়লার চাহিদা সাড়ে ৪ হাজার টন। কিন্তু ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বন্ধ রয়েছে ২ নম্বর ইউনিট। গত সপ্তাহ থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ১ নম্বর ইউনিটও বন্ধ। চালু থেকে একটি ইউনিটে কয়লার চাহিদা ২ হাজার ২০০ টন।
খনি কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়লার স্তূপের উচ্চতা ৫ মিটারের বেশি হলেই বিষাক্ত গ্যাস জমে আগুন ধরার শঙ্কা থাকে। সেখানে এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ মিটারের বেশি। নিয়মিত পানি দিয়ে দুর্ঘটনা রোধের চেষ্টা চলছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘বর্তমানে ব্যবহৃত দুটি ইয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতা ২ লাখ টনের বিপরীতে ২ লাখ ৯০ হাজার টন কয়লা রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী কয়লার স্তূপের উচ্চতা ৫ মিটারের অধিক হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু এখন ইয়ার্ডে কয়লার স্তূপ হয়েছে ১৫ মিটারের অধিক। অতিরিক্ত কয়লা দ্রুত অপসারণ করলে উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে, পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় সার্বক্ষনিক পনি ছিটানোসহ সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, কয়লা অপসারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বারবার তাগাদা দেয়া হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না। উল্টো বিদ্যুৎকেন্দ্র বলছে, দুটি ইউনিট বন্ধ থাকায় কমে গেছে চাহিদা।
বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্তমানে ২ হাজার ২০০ টন কয়লা ব্যবহার করছে। এর বিপরীতে কয়লা খনি থেকে প্রতিদিন উৎপাদন হচ্ছে ৪ হাজার ৫০০ টন। কয়লা মজুত থাকলে গরমকালে তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালানো যাবে। আমাদের চাহিদার তুলনায় খনি কর্তৃপক্ষ বেশি পরিমাণে কয়লা উত্তোলন করায় এ সমস্যা হয়েছে।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে নতুন কূপ থেকে কয়লা উত্তোলনের কথা রয়েছে, যেখানে মজুত প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার টন। সেজন্য বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সব ইউনিট চালুর পাশাপাশি মাতারবাড়িসহ অন্যান্য কেন্দ্রেও কয়লা বিক্রির অনুমোদনের দাবি খনি কর্তৃপক্ষের।