ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

আর্থিক অডিট রিপোর্ট উন্মুক্ত করার প্রস্তাব

অর্থনীতি

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:১৯, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সর্বশেষ

আর্থিক অডিট রিপোর্ট উন্মুক্ত করার প্রস্তাব

সরকারের আর্থিক অনিয়মসংক্রান্ত অডিট রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনার শর্ত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। জাতীয় সংসদে উত্থাপনের পর অডিট রিপোর্ট নিয়ে ‘সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে (পিএসি)’ পর্যালোচনা উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।

তাদের মতে, এ উদ্যোগ নেওয়া হলে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের অর্থ ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে। মূলত ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার আগে এ শর্তটিও জুড়ে দিয়েছে সংস্থাটি। যদিও পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) রুলস অব প্রসিডিউরে অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনার সময় উন্মুক্ত করার বিধান নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, অডিট রিপোর্ট পিএসিতে আলোচনা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করতে পারলে সরকারি ব্যয়ের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা নিশ্চিত ও কাজের গতি বাড়বে। বিশ্বের অনেক দেশে এমন বিধান আছে। কিন্তু আমাদের পিএসির বিধি-বিধানে অডিট রিপোর্ট পর্যালোচনার সময় প্রকাশ্য বা উন্মুক্ত করার বিষয়টি নেই।

আইএমএফ অন্য দেশের উদাহরণ দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের আলোকে এটি এখনই সম্ভব নয়। তবে আমি পিএসির রুলস অব প্রসিডিউর সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছি অনেক আগেই। সেখানে অডিট রিপোর্ট প্রকাশ্যে আলোচনার কথা আছে। কিন্তু করোনার কারণে সে সংশোধনী প্রস্তাব আলোর মুখ দেখেনি। পিএসির রুলস সংশোধনী অনুমোদন হলে এসব শর্ত এমনিতেই পূরণ হয়ে যাবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে গত ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি দু’দফা বাংলাদেশ সফর করেছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। এ সময় অন্যান্য খাত সংস্কারের পাশাপাশি সরকারের অর্থ ব্যয় নিয়ে অডিট রিপোর্ট খাতে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে এই দাতা সংস্থা। তারা বলেছে, উন্নত বিশ্বের অনেক দেশেই অডিট রিপোর্ট জনসাধারণের সামনে প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অডিট রিপোর্ট সম্পর্কে সাধারণ মানুষ জানতে পারছে কিনা এবং দেশীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে সেগুলো প্রচার হচ্ছে কিনা এসব জানতে চেয়েছে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, অডিট রিপোর্ট নিয়ে যখন পিএসিতে পর্যালোচনা বৈঠক হবে, তা যেন টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। পত্রিকাগুলোতে নিউজ প্রকাশের ব্যবস্থা করা হয়। এতে সাধারণ মানুষ জানতে পারবে সরকারের টাকা খরচ কোথায় এবং কীভাবে হচ্ছে।

সূত্র মতে, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে সর্বশেষ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়, এক লাখ ছয় হাজার ৪৭৯ কোটি টাকার অনিয়মসংক্রান্ত অডিট আপত্তির ৫৩টি রিপোর্ট। এর আগের বছর উত্থাপন করা হয় ১৫ হাজার কোটি টাকার আপত্তির রিপোর্ট। এছাড়া ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে উত্থাপন করা হয়েছিল ২৫ হাজার কোটি টাকা আপত্তির রিপোর্ট এবং ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে ১২ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে উত্থাপন করা হয় ৩৮ হাজার ১৭১ কোটি টাকার আপত্তির রিপোর্ট।

বিধান অনুযায়ী দি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) অফিস সরকারের অর্থ ব্যয়ের ওপর অডিট করে। যেগুলো নিম্পত্তি সম্ভব হয় না সেগুলোই রিপোর্ট আকারে দাখিল করা হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। আর যেগুলো ত্রি-পক্ষীয় (সিএজি অফিস, অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়) বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয় তা রাষ্ট্রপতির কাছে রিপোর্ট আকারে আসে না।

আর্থিক অনিয়মের রিপোর্টগুলো রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর প্রতিটি অডিট রিপোর্ট আলোচনার জন্য পাঠানো হয় সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে। ওই কমিটি প্রতিটি রিপোর্ট পর্যালোচনা করে নিষ্পত্তি করেন। সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকা আদায়, জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিসহ বিভিন্ন ধরনের নির্দেশ দেন ওই কমিটি।

এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সিএজি কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, পিএসিতে আলোচনার সময় অডিট রিপোর্ট জনগণের জন্য উন্মুক্ত বা প্রকাশ্যে আনা আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন করবেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা। তবে এ শর্ত নিয়ে পিএসির সঙ্গে মৌখিক আলোচনা হয়েছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, দি কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) প্রতি বছর সরকারের মোট ব্যয়ের মাত্র ৭ শতাংশের ওপর অডিট রিপোর্ট করতে পারছে। সক্ষমতা ও জনবলের অভাবে আর বাড়ানো যাচ্ছে না। তবে উন্নত দেশগুলো সরকারের মোট খরচের ২০ শতাংশ পর্যন্ত অডিট করছে। আমরা সে পর্যায়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। তাহলে সরকারি ব্যয়ের একটি সঠিক তথ্য পাওযা যাবে। তবে এখনই আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।

জনপ্রিয়