রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের একজন সহকারী উপ-পরিদর্শকসহ (এএসআই) ২ পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এরা হলেন-রংপুর পুলিশ লাইনের এএসআই আমির হোসেন ও তাজহাট থানার কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তারা ‘অপেশাদারি আচরণস্বরূপ’ শটগান থেকে ফায়ার করেন। তাদের সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
দুজনকে সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৮ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১ আগস্টে আংশিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের ‘অপেশাদারি আচরণ’ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই দিনই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলাকালে সংঘর্ষে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের নিহত হওয়ার দুই দিন পর পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তদন্ত কমিটির প্রধান রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. সায়ফুজ্জামান ফারুকী।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন দায়িত্ব পালনের সময় এএসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় অপেশাদার আচরণ করেন, যা সুশৃঙ্খল পুলিশ বাহিনীর শৃঙ্খলা পরিপন্থি। তারা কর্তব্যে অবহেলা ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেছেন।
গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন।
ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১৬ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। আর আবু সাঈদ এক হাতে ক্রিকেট খেলার একটি স্ট্যাম্প নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।