ঢাকা রোববার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ , ২৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদার দাবি বাস্তববায়ন হোক

মতামত

মো. সিদ্দিকুর রহমান, আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:৩০, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ১৬:৩৩, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদার দাবি বাস্তববায়ন হোক

বৈষম্য নিরসনের প্রত্যয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক সরকারের সৃষ্ট সব বৈষম্য নিশ্চিহ্ন করে উপড়ে ফেলার মানসিকতা নিয়ে পথচলা শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় চলছে পুরোপুরি উল্টা পথে। সাবেক সরকারের অন্যতম দোসররা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈষম্য সৃষ্টির মানসে এ কাজ করে যাচ্ছেন। এ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি কাজ বৈষম্য তথা প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যা নিরসনে গিট্টু লাগিয়ে দেয়ার মতো।

অভিযোগ আছে, সাবেক সরকারের সচিব প্রধান শিক্ষকদের আপিল বিভাগের রায় নিষ্পত্তি না করে পুনরায় আপিল করেছেন। দুই বছর বিলম্বিত করে এখন মায়াকান্না করছে মন্ত্রণালয়। একদিকে শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ দশম গ্রেড আদায় করার জন্য বলা হচ্ছে। অপরদিকে ১২তম গ্রেডের প্রস্তাবও দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের বাস্তবায়নের উদ্দেশে দশম গ্রেডের প্রাপ্তির বাধা হিসেবে, সাবেক সরকারের আমলে প্রস্তাব করে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে শর্তসাপেক্ষে অনুমোদন করে নেয়া হয়। অতপর মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পাঠানো হয়।

আর মন্ত্রণালয় খেকে বলা হচ্ছে, শিক্ষকেরা যদি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ না চান, তবে হবে না। বিগত সরকারের আমলে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার সমালোচনাও আছে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ফলে আদালত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল স্থগিত করে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে নিয়োগবিধি ২০২৩ এর শিক্ষক, তৃণমূলের কর্মকর্তা, ইউআরসি, পিটিআই শিক্ষকদের পদোন্নতি সুযোগকে ক্ষুণ্ন করে অনভিজ্ঞজনদের নিয়োগকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় সহকারী শিক্ষকদের শতভাগ পদোন্নতি আদেশকে উপেক্ষা করে ৩৫ শতাংশ সহকারী শিক্ষকে সরাসরি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির বিষয়ে দীর্ঘসময় ধরে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে নীরবতা পালন করে যাচ্ছে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০২৩ পাসের মাধ্যমে শিক্ষকদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হছ্ছে। কল্যাণ ট্রাস্টকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সম্পদ হিসেবে পরিণতও করা হচ্ছে। বারবার আবেদন-নিবেদন করা সত্ত্বেও স্বতন্ত্র প্রাথমিক শিক্ষা ক্যাডার সৃষ্টির কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। মন্ত্রণালয় সরকারের সময় সৃষ্ট সহকারী প্রধান শিক্ষক পদ ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব কার্যকর করার কাজ দৃশ্যমান। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে শিক্ষকদের মর্যাদার দাবি ১০ম  গ্রেডকে বাস্তবসম্মত নয় বলেও বলা হচ্ছে। যেখানে বর্তমান সরকার বৈষম্য নিরসনের প্রত্যয় কাজ করে যাচ্ছেন। যেখানে প্রাথমিক শিক্ষা কনসাল্টেশন কমিটি প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে ও শিক্ষকদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবি বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে যাচ্ছেন। সেখানে মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের অবহেলায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ১০ম গ্রেডের বাস্তবায়নে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন। 

উল্লেখ্য, দীর্ঘ সময় সাবেক সরকারের আমলে শিক্ষকেরা তাদের মর্যাদার দাবি থার্ড ক্লাস থেকে বেরিয়ে সেকেন্ড ক্লাস পেতে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। বুক ভরা আশা নিয়ে তারা অনেকটা স্বস্তি অনুভব করেছিলেন, বৈষম্য নিরসনে বর্তমান সরকার তাদের মনের চাওয়া পাওয়া পূরণ করবে। সারা দেশের শিক্ষকদের তথা জাতির প্রত্যাশা ছিলো শিক্ষকেরা থার্ড ক্লাস থেকে বেরিয়ে মর্যাদা লড়াইয়ের চূড়ান্ত লক্ষ্য ফার্স্ট ক্লাস মর্যাদার জন্য এক ধাপ এগিয়ে যাবে। চক্রান্তের বেড়াজালে তারা প্রকাশ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্যে একটা ধাক্কা খেলেন। অবশ্যই ধাক্কা কোথা থেকে, কে মেরেছেন প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ তা বুঝতে পেরেছে। শিক্ষার উন্নয়নে যারা চক্রান্ত করেন, তারা দেশ ও জাতির শত্রু। আশা করি সংশ্লিষ্টরা প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে এই হীন চক্রান্ত থেকে বেরিয়ে আসবেন।

লেখক: শিক্ষাবিদ

জনপ্রিয়