উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
সাইফউদ্দিন আহমেদ ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ জুন পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলভী সিদ্দিক আহমদ ছিলেন একজন শিক্ষক এবং মাতা আলিফা খাতুন। তার পৈতৃক নিবাস ফেনী জেলার পরশুরাম থানার ধনিকুন্ডা গ্রামে।
সাইফউদ্দিন আহমেদ মানিক দেশ বিভাগের পর ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে পিতা মাতার সঙ্গে ঢাকায় এসে গোপীবাগে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ঢাকার মুসলিম গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। বাল্যকাল থেকেই খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অনুরাগী ছিলেন। ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।
বিশ শতকের ষাটের দশকের প্রখ্যাত ছাত্রনেতাদের অন্যতম ছিলেন সাইফউদ্দিন মানিক। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন ও শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বিরোধী যে ছাত্র আন্দোলন গড়ে ওঠে তার সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন। তিনি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন। ১৯৬৫ খিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৬ খিষ্টাব্দে ছাত্র ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শ্রমিক আন্দোলনে যোগ দেন। ডেমরার বাওয়ানি পাটকল শ্রমিক ইউনিয়ন তাকে সভাপতি নির্বাচিত করে।
মুক্তিযুদ্ধে ন্যাপ-সিপিবি-ছাত্র ইউনিয়ন কর্মিদের নিয়ে গঠিত যৌথ গেরিলা বাহিনীর অন্যতম সংগঠক ছিলেন সাইফউদ্দিন মানিক। স্বাধীনতা-উত্তর কালে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সিপিবির সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘গণফোরাম’ নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠনে তিনি উদ্যোগী ভূমিকা নেন এবং ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আমৃত্যু তিনি এ দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
কমরেড সাইফুদ্দিন আহমেদ মানিক ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুবরণ করেন।