মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে একমাত্র এশীয় ভাষা হিসাবে ব্যালট পেপারে স্থান করে নিয়েছে বাংলা ভাষা। এশীয়-ভারতীয় ভাষাগুলির মধ্যে বাংলাই প্রথম ছাপা হল নিউইয়র্কের ব্যালট পেপারে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর খবর অনুযায়ী, নিউইয়র্ক প্রদেশের ব্যালট পেপারে অন্য ভাষার সঙ্গে রয়েছে বাংলাও।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। মূলত দ্বিমুখী এই প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লড়াই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে আমেরিকার সব প্রদেশেই আগাম ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে, যাকে বলা হয়ে থাকে ‘আর্লি ভোটিং’। নিউইয়র্কের ভোটারেরা আগাম ভোট দিতে গিয়ে দেখেন ব্যালট পেপারে প্রার্থী এবং দলের নাম বাংলাতেও লেখা রয়েছে।
নিউইয়র্কে বাংলাভাষী বহু মানুষের বাস। যাদের সিংহভাগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রদেশে এক লক্ষেরও বেশি বাংলাভাষী মানুষ বসবাস করেন। নিউইয়র্কে বাঙালিদের বসবাস মূলত ব্রুকলিন, কুইনস এবং ব্রঙ্কসে। ব্রুকলিনের কেনসিংটন এলাকার একাংশকে স্থানীয়েরা ‘ছোট বাংলাদেশ’ বলে ডেকে থাকেন। আমেরিকায় যত বাঙালি বসবাস করেন, তাঁদের ৪০ শতাংশেরই বাস নিউইয়র্কে। সামগ্রিক ভাবে গোটা যুক্তরাষ্ট্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন লক্ষাধিক বাঙালি। এই পরিস্থিতিতে মনে করা হচ্ছে, বাঙালি ভোটারদের সুবিধার্থেই ব্যালটে বাংলা ভাষা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিউইয়র্ক প্রশাসন।
আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রদেশগুলিতে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম রয়েছে। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে যেমন হিন্দিভাষী ভোটারদের কথা মাথায় রেখে ইলিনয় প্রদেশের ব্যালটে অন্য অনেক ভাষার সঙ্গে হিন্দিও রাখা হয়েছিল।
গত রোববার থেকে আমেরিকায় শুরু হয়ে গিয়েছে আগাম ভোট পর্ব। সেখানে ইতিমধ্যেই সে দেশের প্রায় তিন কোটি ২৫ লক্ষ ভোটদাতা গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করেছেন। ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই আমেরিকার ৪০টি প্রদেশে শুরু হয়ে গিয়েছে ব্যালট সংগ্রহ করে আগাম ভোটদানের পালা। সেখানে রোববার প্রথম দিনেই ভোট দিয়েছেন আমেরিকার প্রায় এক কোটি ৪০ লক্ষ নাগরিক।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার ৫০টি প্রদেশের প্রতিটিতেই নিজস্ব ভোটিং পদ্ধতি রয়েছে। পোস্টের মাধ্যমে ব্যালট সংগ্রহ এবং পোলিং স্টেশনে সশরীরে গিয়ে আগাম নির্বাচনের দিন ভোটদানের ব্যবস্থা রয়েছে বিভিন্ন প্রদেশে। কোনও কোনও প্রদেশে আবার একসঙ্গে তিনটি পদ্ধতিই প্রচলিত।