গাকৃবিতে লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত উদ্ভাবন | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

গাকৃবিতে লবণসহিষ্ণু গমের নতুন জাত উদ্ভাবন

উচ্চ লবণ সহিষ্ণু গমের নতুন জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগ। উচ্চ লবণাক্ততা সহনশীলতার দিক থেকে দেশে এটিই গমের প্রথম জাত।

#বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় #কৃষি #শিক্ষার্থী

উচ্চ লবণ সহিষ্ণু গমের নতুন জাত ‘জিএইউ গম ১’ উদ্ভাবন করেছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাকৃবি) কৃষিতত্ত্ব বিভাগ। উচ্চ লবণাক্ততা সহনশীলতার দিক থেকে দেশে এটিই গমের প্রথম জাত।

কৃষিতত্ত্ব বিভাগের কৃষি বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম ময়নুল হক ও অধ্যাপক ড. মো. মসিউল ইসলামের নেতৃত্বে গবেষণায় এই সফলতা আসে।

জানা যায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য অধিক কার্যকরী প্রিমিয়াম কোয়ালিটির গমের এই নতুন জাতটি লবণাক্ততা সহনশীল, উচ্চফলনশীল ও অধিক প্রোটিন সমৃদ্ধ। অপার সম্ভাবনাময় এ জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে গাকৃবির মোট উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা ৯১টিতে পৌঁছাল।

নতুন উদ্ভাবিত এই গমের জাত গাকৃবির গবেষণা মাঠে দীর্ঘদিন পরীক্ষা করা হয়। এরপর ২০২১ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত দেশের দক্ষিণাঞ্চলে কৃষকের মাঠে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লবণাক্ততা সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীল হিসাবে প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির সার্বিক তত্ত্বাবধানে দেশের ৬টি স্থানে মাঠ মূল্যায়নে প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফল আসে। জাতীয় বীজ বোর্ড ১৭ জুন গমের এই নতুন জাতের ছাড়পত্র দেয়।

এ গমে বিদ্যমান অধিক প্রোটিন শরীর গঠন ও মেরামত, শক্তি সরবরাহ, ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে রোগ প্রতিরোধে অধিক সহায়তা করে থাকে। অন্যদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণ গ্লুটেনিন, উচ্চ প্রোটিন ও লো ফ্যাট হওয়ায় সহজে শরীরে শোষিত হতে পারে।

জিএইউ গম ১-এর দানা তামাটে, চকচকে এবং তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে পরিপক্ব হয়। আমন মৌসুমে ধান কাটার পর বীজ বপন করলে ৯৫ থেকে ১০০ দিনে উৎপাদন পাওয়া যায়। ফলে অল্প সময়ে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। অন্যদিকে এ গম গাছের আকার বড়, কাণ্ড মোটা ও গুটির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এটি থেকে অধিক পরিমাণ খড় পাওয়া যায়। ফলে গবাদি পশুর খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

এ বিষয়ে গবেষক অধ্যাপক ড. মো. মসিউল ইসলাম বলেন, জিএইউ গম ১ উদ্ভাবন আমাদের দীর্ঘদিনের গবেষণা, পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার ফল। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও লবণাক্ত এলাকায় ফসল উৎপাদনের যে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যেই আমরা এই গমের জাতটি উদ্ভাবনে কাজ শুরু করি। এই জাতটি লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, বরং দেশের কৃষি খাতের জন্য একটি বড় অর্জন। দেশের উপকূলীয় অঞ্চল ও লবণাক্ত মাটিযুক্ত এলাকায় কৃষি উৎপাদন চ্যালেঞ্জের মুখে থাকে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের গবেষকদ্বয় নিরলস পরিশ্রম করে এমন একটি জাত উদ্ভাবন করেছেন, যা লবণাক্ত পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে এবং অধিক ফলন দিতে সক্ষম।

#বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় #কৃষি #শিক্ষার্থী