ভাসমান হাসপাতাল স্থাপনের কথা ভাবছে সরকার: রিজওয়ানা | মেডিক্যাল নিউজ

ভাসমান হাসপাতাল স্থাপনের কথা ভাবছে সরকার: রিজওয়ানা

হাওরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভাসমান হাসপাতালের কথা ভাবছে সরকার বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

#হাসপাতাল #চিকিৎসক #ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ

হাওরের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভাসমান হাসপাতালের কথা ভাবছে সরকার বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনাও করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘হাওরের সংকট ও সম্ভাবনা’-শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা চিন্তাভাবনা করছি কীভাবে হাওরে ভাসমান হাসপাতালের মাধ্যমে মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে আমরা হাওরে ভাসমান হাসপাতাল করার চিন্তা করছি।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে সব এলাকার মতো হাওরেও সমস্যার অভাব নেই। এসব সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, বিষয়টা এমন নয়। হাওরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার সংকট নিয়ে শুনে আসছি বহু বছর ধরে, কিন্তু কখনো কোনো সমাধান দেখি না।

হাওর মূলত একটি মিঠাপানির সমুদ্র। এ রকম অনন্য বাস্তুতন্ত্র পৃথিবীতে বিরল মন্তব্য করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘হাওর এলাকার মানুষের মতামত নিয়েই আগের যে মাস্টারপ্ল্যান (মহাপরিকল্পনা) ছিল, সেটা এখন হালনাগাদ হচ্ছে।

হাওরে নিয়ন্ত্রণহীন পর্যটনের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, হাওরের পর্যটন এমন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যাওয়ার কথা ছিল না। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আমরা এখন একটা সুরক্ষা আদেশ প্রস্তুত করছি। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে পানি আইনের অধীনে হাওর রক্ষায় সুরক্ষা আদেশের খসড়া প্রস্তুত করছি।

সুরক্ষা আদেশে পর্যটকের কী করণীয় সেটা উল্লেখ থাকবে বলে জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, সুরক্ষা আদেশে বলে দেওয়া থাকবে একজন পর্যটক কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না। এটা নিয়ন্ত্রণ নয়, এটাই ইকো ট্যুরিজমের (পরিবেশবান্ধব পর্যটন) প্রসার। আওয়াজ সৃষ্টি করে, গান–বাজনা করে যে ট্যুরিজম সেটাকে কোনোভাবে ইকো ট্যুরিজম বলা যায় না।

যেখান থেকে পর্যটকেরা হাওরে ভ্রমণ শুরু করেন, সেখান থেকে তদারকির জন্য একটা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান পরিবেশ উপদেষ্টা। এ কাজের জন্য জেলা প্রশাসন, হাওর অধিদপ্তরের প্রতিনিধি ও প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবকদের রাখা হবে বলে জানান তিনি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, হাওরে স্বাস্থ্যসেবার সংকট নিরসনে ভাসমান হাসপাতাল ও রিভার অ্যাম্বুলেন্স কতটা টেকসই একটি ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, একটা ভাসমান হাসপাতাল যখন দেব, তখন হাওরে পানি থাকবে মাত্র পাঁচ মাস। বাকি সাত মাস কিন্তু সেখানে রোগী চাইলেও যেতে পারবে না। কীভাবে একটা টেকসই সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করছি।

দেশের সব হাওর নিয়ে একসঙ্গে কাজ না করে একটা হাওরকে ধরে সেখানে মৎস্য, কৃষি—কোথায় কোথায় নিয়ন্ত্রণ আনা দরকার সেটা নিয়ে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটা আন্ত সংস্থা সেল গঠন করার কথাও জানান পরিবেশ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, মহাপরিকল্পনা ও সুরক্ষা আদেশের অধীনে এমন একটি সেল গঠন করে সচেতনতামূলক কিছু কাজ শুরু করা যায় কি না, সেটা আমরা চিন্তা করছি।

আপাতত সুরক্ষা আদেশ টাঙ্গুয়ার হাওরের জন্য করা হচ্ছে জানিয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সুরক্ষা আদেশ আমরা সব হাওরের জন্য করতে পারছি না। কারণ, এটি করতে হলে ল্যান্ড স্পেসিফিকেশন লাগে যেমন দাগ, মৌজা, খতিয়ান ধরে ধরে করতে হয়। ফলে আমরা এখন টাঙ্গুয়ার হাওরে এটা করতে পারব। কারণ, এটি যেহেতু প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, তার ল্যান্ড স্পেসিফিকেশনটা আমাদের আছে।

#হাসপাতাল #চিকিৎসক #ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ