সরকারি কর্মকর্তাদের আবারও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির উদ্যোগ | ফিচার এবি নিউজ

সরকারি কর্মকর্তাদের আবারও ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির উদ্যোগ

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৬৪ জনকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

#সচিবালয় #চাকরিজীবী

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকের শাসনামলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দাবিতে গত ফেব্রুয়ারিতে ৭৬৪ জনকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। আরও সাত শতাধিক বঞ্চিত কর্মকর্তার পদোন্নতির আবেদন পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চ আদালতে রিটের রায় বাস্তবায়নে আরও অর্ধশতাধিক কর্মকর্তার ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির বিষয়ে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম চলছে বলে জানা গেছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বঞ্চিত আরো ৭৭৬ কর্মকর্তার ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির আবেদন পুনর্বিবেচনা করছে সরকার। দুই-একদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। হাইকোর্টে রিটের রায় বাস্তবায়নে বিবেচনা করা হচ্ছে আরও ৫১ কর্মকর্তার বিষয়টিও। এ কার্যক্রম অবশ্য চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয়েছে, যা শেষ হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিব বলেন, ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির আবেদন কমিটির মাধ্যমে রিভিউ করা হচ্ছে। এ-সংক্রান্ত দুটি কমিটি হয়েছে। একটির কাজ শেষ, আরেকটি কাজ শুরু করেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এখানে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করছে। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা প্রজ্ঞাপন আকারে তালিকা প্রকাশ করব।

শেখ হাসিনার শাসনামলে পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তাদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির আবেদন পুনর্বিবেচনা করতে গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর একটি কমিটি গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। সাবেক অর্থ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প পরিচালক জাকির আহমেদ খানের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের রিভিউ কমিটির মেয়াদ আগামীকাল শেষ হচ্ছে। আর এ সময়ের মধ্যে সুপারিশ চূড়ান্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশনাও রয়েছে।

এ বিষয়ে অগ্রগতি জানতে যোগাযোগ করা হলে কমিটির প্রধান জাকির আহমেদ খান বলেন, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বিষয়ে সব কাগজপত্র রেডি হচ্ছে। পুরো সুপারিশের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। প্রথম পর্যায়ের কিছু হয়েছে। এখন প্রশাসন বাদে যেসব ক্যাডার রয়েছে তাদের বিষয়টি পর্যালোচনা হচ্ছে। কেউ যাতে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত না হন সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

তিনি আরও বলেন, যাদের প্রমোশন হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি, বিষয়টি সম্পর্কে সবাই অবগত। তারা সবাই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সবাই পদোন্নতিটাই পাচ্ছেন, কেউ চাকরি ফিরে পাচ্ছেন না। অর্থাৎ ডেজিগনেশনটা এবং আর্থিক সুবিধাপ্রাপ্ত হবেন তিনি।

ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি-সংক্রান্ত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য নতুন কমিটি গঠন হয় ৩ জুন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ শাখা থেকে এ বিষয়ে জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রিট আবেদনকারী কর্মকর্তাদের উচ্চতর পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির জন্য প্রাপ্যতা নির্ধারণের বিষয়ে কাজ করবে এ কমিটি। ‘কেস টু কেস’ পর্যালোচনাপূর্বক পদোন্নতির বিষয়ে তারা সুপারিশ করবে। অতিরিক্ত এক সচিব বণিক বার্তাকে জানান, উচ্চ আদালতে একটি রিটের রায় নিয়ে ৫১ জন ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির জন্য আবেদন করেছেন।

এ প্রসঙ্গে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব মিঞা মুহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদী বলেন, ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে যারা পদোন্নতিবঞ্চিত ছিল তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য আলাদা কমিটি রয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ওই কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করবে। আর আমাদের কিছু জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির রায় পেয়েছেন। তাদের বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য আরেকটি কমিটি হয়েছে। ওই কমিটি তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে।

#সচিবালয় #চাকরিজীবী