কিংবদন্তি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন আজ | বিবিধ নিউজ

কিংবদন্তি হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন আজ

বাংলা সংগীতজগতের অন্যতম পুরোধা ও সুরস্রষ্টা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে বলা হয় সংগীতের ঈশ্বর। তিনি বাংলা সংগীতজগৎকে বিশাল উচ্চতায় তুলে ধরেছেন। গান গেয়েছেন, সুর করেছেন, অনন্য সৌন্দর্যে ভরিয়ে দিয়েছেন সংগীতবলয়কে। নানামুখী গানে আর কোনো শিল্পী তার সমকক্ষ হতে পারেননি। রবীন্দ্রসংগীতের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পী ছিলেন তিনিই।

কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের আজ জন্মদিন। তিনি ১৯২০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তার মাতামহের বাড়ি ভারতের বারাণসী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার সুরেলা কণ্ঠে রবীন্দ্রসংগীত আর আধুনিক গান আজও গেঁথে আছে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে।

‘পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহ ভরা কোলে তব মাগো, বলো কবে শীতল হবো’ কিংবা ‘ও নদীরে, একটি কথা শুধাই শুধু তোমারে’ অথবা ‘মুছে যাওয়া দিনগুলি আমায় যে পিছু ডাকে’—গায়ক বা সুরকার হিসেবে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সেরা তিনটি গান বাছা, আর সমুদ্রের ঢেউ গোনা, একই রকমের ব্যর্থ প্রয়াস। অবিস্মরণীয়, অনবদ্য, কালজয়ী, যে বিশেষণই ব্যবহার করা যাক না কেন, অধিকাংশ বাঙালিরই তা যথেষ্ট মনে হবে না।

বাংলা সংগীতজগতের অন্যতম পুরোধা ও সুরস্রষ্টা হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে বলা হয় সংগীতের ঈশ্বর। তিনি বাংলা সংগীতজগৎকে বিশাল উচ্চতায় তুলে ধরেছেন। গান গেয়েছেন, সুর করেছেন, অনন্য সৌন্দর্যে ভরিয়ে দিয়েছেন সংগীতবলয়কে। নানামুখী গানে আর কোনো শিল্পী তার সমকক্ষ হতে পারেননি। রবীন্দ্রসংগীতের সর্বশ্রেষ্ঠ শিল্পী ছিলেন তিনিই।

বাংলা সংগীত জগতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এক কালজয়ী নাম। অসাধারণ সুর আর স্নিগ্ধ ও মোহনীয় কণ্ঠের ছোঁয়ায় তিনি বাংলা সংগীতভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করেছেন, হয়ে উঠেন সংগীতের বরপুত্র, হয়ে আছেন সুরের জাদুকর। তিনি হিন্দি সংগীত জগতে হেমন্ত কুমার নামে প্রসিদ্ধ। পঞ্চাশ-ষাটের দশককে আধুনিক বাংলা গানের স্বর্ণযুগ মনে করা হয়। আর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে বলা হয় আধুনিক গানের প্রবাদ পুরুষ।

সিনেমার গান হোক বা রবীন্দ্রসঙ্গীত বা আধুনিক, গায়ক হিসেবে কোনও ক্ষেত্রেই বিন্দুমাত্র অস্বচ্ছন্দ বোধ করতেন না তিনি। সুরকার হিসেবেও বারবার প্রমাণ দিয়ে গিয়েছেন অগাধ বৈচিত্র্যের। একদিকে পশ্চিমী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের ভক্ত ছিলেন, অন্যদিকে ভারতীয় সংগীতের নানা আঙ্গিকও ছিলো তার নখদর্পণে।

তার আদি নিবাস ছিলো দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগরে। তার ছেলেবেলা কেটেছে জয়নগরের বহেডু গ্রামে। চব্বিশ পরগনা থেকে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে তার পরিবার কলকাতায় চলে যায়। বড় ভাই তারাজ্যোতি ছোটগল্প লিখতেন। হেমন্ত মেজো। বড় ভাই ছাড়া বাকি দুই ভাই তারাজ্যোতি ও অমল মুখোপাধ্যায়। হেমন্তের ছোটভাই অমল মুখোপাধ্যায় গান করতেন।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় কখনো গান শিখেননি। লোকমুখে শুনে শুনে গান তুলে নিতেন গলায়। টিফিন পিরিয়ডে স্কুলের ক্লাসরুমে বসে গান গাইতেন। একবার সেই গান শুনে ফেলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার। স্কুল থেকে প্রায় বিতাড়িত করে দিয়েছিলেন। পরে বাবা গিয়ে অনেক অনুরোধ করে সামাল দিয়েছিলেন।

শিক্ষাজীবনে হেমন্ত ভবানীপুরের মিত্র ইন্সটিটিউশনে ছিলেন। সেখানেই তার সঙ্গে পরিচয় হয় কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের। হেমন্তকে রেডিওতে নিয়ে গিয়েছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়। শৈলেশ দাসগুপ্তের সহায়তায় ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ বছর বয়সে রেডিওতে প্রথম গান গাইলেন হেমন্ত।

সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পুরস্কার-সম্মাননার পাশাপাশি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সম্মানসূচক ডিলিট। পেয়েছেন সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ সেপ্টেম্বর পরলোকগমন করেন।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।