পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে (৩৯) প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যায় জড়িতদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
শনিবার (১২ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ‘এই পাশবিক হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হবে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আইন, ২০০২-এর ধারা ১০-এর অধীনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের ব্যবস্থা করা হবে।’
বুধবার হাসপাতালের সামনে ব্যস্ত সড়কে প্রকাশ্যে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হত্যার আগে সোহাগকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে এবং ইট-পাথরের টুকরা দিয়ে আঘাত করে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ থেঁতলে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করা হয়। তার শরীরের ওপর উঠে লাফান কেউ কেউ।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে পুরান ঢাকার কয়েক যুবক সোহাগকে বুধবার দুপুরে ডেকে নেয়। সন্ধ্যায় তাঁকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সোহাগ পুরোনো তামার তার ও অ্যালুমিনিয়াম শিটসহ ভাঙাড়ি জিনিসের ব্যবসা করতেন। তিনি একসময় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরগুনা সদরে। তাঁর ১৪ বছর বয়সী মেয়ে সোহানা ষষ্ঠ শ্রেণিতে এবং ১১ বছর বয়সী ছেলে সোহান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুক্রবার কেরানীগঞ্জ থেকে এজাহারভুক্ত আসামি মনির হোসেন ও আলমগীর হোসেনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১০। এর আগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনকে।
সিসিটিভির ছবি দেখে পুলিশ ও স্থানীয়রা আরও চারজনের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তারা হলেন– মিটফোর্ড হাসপাতালের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. মনির, অ্যাম্বুলেন্স চালক নান্নু, চকবাজার থানা ছাত্রদলের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য সচিব অপু দাস ও চকবাজার থানা যুবদলের সাবেক সদস্য সরোয়ার হোসেন টিটু। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল গতকাল এ ঘটনায় নাম আসা পাঁচজনকে নিজেদের সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে।
হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় এ বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘যুবদলের অনেক গুণ, পাথর মেরে সোহাগ খুন’, ‘যুবদলের চাঁদাবাজরা, হুঁশিয়ার সাবধান’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
সোহাগ হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাবি ছাত্রদল। গতকাল রাত ১০টার দিকে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ডাস চত্বর পার্শ্ব রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।