৯৯৯-এ ফোন দিয়ে হাসি-ঠাট্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে পুলিশ | বিবিধ নিউজ

৯৯৯-এ ফোন দিয়ে হাসি-ঠাট্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে পুলিশ

বাংলাদেশের জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর হলো ৯৯৯। যেকোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে জরুরি সেবা পেতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে যে কেউ এই নম্বরে ফোন করতে পারেন।

#পুলিশ #সরকারি স্কুল #হাসপাতাল

বাংলাদেশের জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর হলো ৯৯৯। যেকোনো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হলে জরুরি সেবা পেতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে যে কেউ এই নম্বরে ফোন করতে পারেন। বাংলাদেশ পুলিশের অধীন এই কল সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। এই নম্বরে ফোন করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা কিংবা এ-সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যায়। তবে একদল দুষ্টু লোক ৯৯৯-এ মিসড কল কিংবা হাসি-তামাশার জন্য কল করেন।তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করছে পুলিশ। এবার ঈদে এমন কলের সংখ্যা ছিল অনেক। এবার ঈদের ছুটির সাত দিনে এমন ফোনকলের সংখ্যা ছিল ৮২ হাজার ৮৬৫টি।

জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯– কর্তৃপক্ষ বলছে, জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে এভাবে অপ্রয়োজনীয় কল করলে জরুরি সেবা প্রদান বিঘ্নিত হয়। অনেক সময় জরুরি সেবা গ্রহণকারী ব্যক্তিকে অপেক্ষা করতে হতে পারে। যদিও প্রতি মুহূর্তে ৯৯৯-এ ১০০টি কল রিসিভ করার সক্ষমতা রয়েছে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী অন্য জরুরি সেবাও দিচ্ছে ৯৯৯।

কর্তৃপক্ষ জানায়, ইব্রাহিম শেখ নামে একজন ঈদের রাতে ৯৯৯-এ ফোন করে হাসি-ঠাট্টা করতে থাকেন। প্রথমে কল দিয়ে প্রায় দেড় মিনিট হাসি-ঠাট্টা করেন। দ্বিতীয়বার কল দিয়েও একই কাজ করেন তিনি। পরে ৯৯৯ থেকে তার নম্বরটি ব্লক করে দিতে বাধ্য হন অপারেটর।

ঈদের পরদিন কয়েকজন শিশু তাদের মা-বাবার মোবাইল থেকে অনবরত ৯৯৯-এ ফোন করতে থাকে। ৩০ মিনিট ধরে ছয়টি অপারেটরের নম্বর থেকে ৯৯৯-এ কল করে শিশুরা। তারা গল্প শুনতে চায়, ৯৯৯ কীভাবে কাজ করে তা জানতে চায় আবার অনেক শিশু জানতে চায় ঈদের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়বে কি না।

ঈদুল আজহার ছুটিতে সারাদেশে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ১৫ হাজার ৬১৯ জন ব্যক্তি সেবা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চার হাজার ১০২ জন সেবা নিয়েছেন মারামারি-সংক্রান্ত বিষয়ে। গত ৫ থেকে ১৩ জুন ঈদুল আজহার ছুটিতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে দুই লাখ ২০ হাজার ৩৮৮টি কল আসে। এসব কলের মধ্যে ১৫ হাজার ৬১৯ জন জরুরি সেবা পেয়েছেন; যাদের মধ্যে ১৩ হাজার ৮৩১ জন জরুরি পুলিশি সেবা, ৯৯৩ জন অ্যাম্বুলেন্স সেবা এবং ৭৯৫ জন জরুরি ফায়ার সার্ভিস সেবা পেয়েছেন।

যেসব ব্যক্তি জরুরি সেবা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চার হাজার ১০২ জন সেবা নিয়েছেন আধিপত্য বিস্তার ও তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে মারামারি সংক্রান্ত বিষয়ে। এছাড়া এক হাজার ২১৪ জনকে লেনদেন নিয়ে জোর করে আটকে রাখা, এক হাজার ৬২ জনকে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি মেডিক্যাল সেবা এবং ৯৯২ জনকে বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সেবা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া এক হাজার ২৭১ জনকে ঈদুল আজহায় গরুর হাটে চাঁদাবাজি, রাস্তায় চাঁদাবাজি, নদীতে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক পশু অন্য হাটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ, অজ্ঞান-মলম পার্টি এবং শব্দদূষণ-সংক্রান্ত বিষয়ে সেবা দেওয়া হয়েছে।

৯৯৯-এ সাত দিনে ব্লাংক কল করা হয়েছে ৭০ হাজার ৯০৯টি, প্রাংঙ্ক কল করা হয়েছে ৪ হাজার ৩০০টি এবং মিসড কল এসেছে ৭ হাজার ৬৫৬টি।

৯৯৯ এর কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি কলই গুরুত্বপূর্ণ সেটা ফলস কলই হোক আর প্রাংঙ্ক কল হোক। যদিও এসব কল প্রকৃত জরুরি সেবা প্রদানে বাধা সৃষ্টি করে। ভুয়া কলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং নম্বরটি ব্লক করে দেওয়া হবে। অসতর্কতার কারণে যাতে ৯৯৯-এ কল না যায় সেজন্য আপনার মোবাইলটি লক করে রাখুন।

জানতে চাইলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯–এর পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মহিউল ইসলাম বলেন, ‘৯৯৯ জরুরি মুহূর্তে পুলিশ, ফায়ার ও অ্যাম্বুলেন্স সেবাসহ বিভিন্ন তথ্যসেবার জন্য নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ৯৯৯-এ বেশিরভাগ কলই অপ্রয়োজনীয়। অপ্রয়োজনীয় ফোনকল ওয়েটিং টাইম বাড়িয়ে দ্রুত সেবা নিতে বাধার সৃষ্টি করছে, যা বিপদে পড়া কলারকে সেবা পেতে দেরি করাচ্ছে ও ৯৯৯-এর সেবাদানকারীদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

#পুলিশ #সরকারি স্কুল #হাসপাতাল