নবীজির সঙ্গে ইহুদিদের শত্রুতা | মতামত নিউজ

নবীজির সঙ্গে ইহুদিদের শত্রুতা

শেষ নবী যেহেতু ইহুদি বংশে জন্মগ্রহণ করেননি, তাই তাদের অতীত স্বভাব চরিত্র, একগুঁয়েমি ও জেদ অনুযায়ী বনি ইসরায়েলরা অনেক নবীকে অমান্য ও হত্যা করার মত হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে অমান্য করা শুরু করলো। এমনকি তাঁকেও হত্যা করার পরিকল্পনা করলো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তা পেরে ওঠেনি।

#মহানবী (সা.) #ইহুদি

অতীত দিনে অতিবাহিত সকল নবী রাসুলের ওপর এবং শেষ নবী ও শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর ঈমান পোষণ করা ইসলামি আকিদার একটি মৌলিক শর্ত। আগের নবী ও রাসুলের পর পরবর্তী নবী ও রাসুল আগমন করলে এ পরবর্তী নবীর উপর ঈমান আনা ও তার শরিয়াত অনুযায়ী আমল করা ফরজ হয়ে যায়। অথচ আগের নবী ও রাসুল বরহক ছিলেন, সত্য ছিলেন, একথার উপর দৃঢ়ভাবে ঈমান পোষণ করতে হবে। কিন্তু আগের নবীর শরিয়াতের উপর আমল করা বাতিল হয়ে যায়।

এ ধারায় এভাবেই দুনিয়ায় নবী রাসুল আগমনের সিলসিলা জারী থাকে। কিন্তু অভিশপ্ত ইহুহি ও খ্রিস্টান জাতি সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রাসুল হিসেবে মানতে অস্বীকার করলো। তার শরিয়াত অনুযায়ী আমল করতে রাজি হল না। অথচ তারা আসমানি কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলের বাহক জাতি। এ জাতিকেই আহলে কিতাব বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। তাদের কিতাবে এ নবীর নাম ধরে তার আগমনের আগাম সংবাদ দেয়া হয়েছে। তারা এটাকে বিশ্বাসও করতো।

কিন্তু শেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর আগমনের পর তার সত্যতা সম্পর্কে দুই আহলে কিতাব দিবালোকের মত নিঃসন্দেহে থাকার পরও তাকে অস্বীকার করে বসলো। তার অনুসারীদের সাথে শত্রুতা পোষণ করতে লাগলো। অথচ তারা শেষ নবীকে এভাবে পরিষ্কার জানতো, যেভাবে তারা তাদের সন্তান সন্তনিকে সঠিকভাবে জানতো। কোরআনে বলা হয়েছে: যাদেরকে আমি কিতাব দিয়েছি তারা তাকে এতটা ভালোভাবে চেনে যেমন চেনে নিজেদের সন্তানদেরকে। নিশ্চয় তাদের মধ্যে কিছু লোক জেনেশুনে সত্য গোপন করে। (সুরা বাকরা: ১৪৬) ইহুদি খ্রিস্টানরা মনে করেছিলো শেষ নবী তাদের গোত্র থেকে আগমন করবেন। তারা শেষ নবীকে নিয়ে আবার ইহুদি জাতিকে দুনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত করবে, দুনিয়া জয় করবে।

শেষ নবী যেহেতু ইহুদি বংশে জন্মগ্রহণ করেননি, তাই তাদের অতীত স্বভাব চরিত্র, একগুঁয়েমি ও জেদ অনুযায়ী বনি ইসরায়েলরা অনেক নবীকে অমান্য ও হত্যা করার মত হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে অমান্য করা শুরু করলো। এমনকি তাঁকেও হত্যা করার পরিকল্পনা করলো। কিন্তু আল্লাহর রহমতে তারা তা পেরে ওঠেনি।

কোরআন মাজিদে বনি ইসরাইল গোত্রীয় নবীদের সাথে ইহুদি জাতির বেইমানির ইতিহাসের বর্ণনা বার বার এসেছে। সাথে সাথে শেষ নবীর সাথেও তাদের চরম বেইমানির কথাও বলা হয়েছে। মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় যাবার পর মদিনার ইহুদিরা হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে গ্রহণ করতে পারেনি। সে সময় তারা বেশীর ভাগই মদিনায় বসবাস করত। তারা রাসুলের বিরুদ্ধে নানা কূট-কৌশল রচনা করেছে। তাদের নারীরাই এ চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের পুরো ভাগে ছিল। ইহুদি নারীরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে হত্যা করার জন্য কতই না ষড়যন্ত্র করেছে!

মদিনায় এক ইহুদি কুটিল রমণী রসুলকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে খাবারে বিষ মিশিয়ে দিয়ে তাকে হত্যা করতে পরিকল্পনা এঁটেছিল। জাতিগত বিদ্বেষ, গোষ্ঠীগত আক্রোশ থেকেই এ অভিশপ্ত ইহুদি জাতি শেষ নবীকে হত্যা করার চেষ্টায় সব সময় মগ্ন ছিল। তাদের সব ষড়যন্ত্রই বার বার ব্যর্থ হয়েছে, নস্যাৎ হয়েছে।

ইহুদিরা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে তার গোটা নবুয়াতের জীবনের সকল কল্যাণকর কাজে বাধা দিয়েছে। যুদ্ধে পরাজিত করে তার আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। যাদু মন্ত্র করে, বিষ প্রয়োগ করে তাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। মদিনার মুনাফিকদের সাথে চক্রান্তের জালে জড়িত হয়ে নবীর ক্ষতি সাধন করতে চেয়েছে। মুসলিম কাফেলার অগ্রযাত্রাকে চেয়েছে বাধাগ্রস্ত করতে। কিন্তু কিছুতেই তাদের কোনো ষড়যন্ত্রে সফল হতে পারেনি। সর্বশেষ তারা রাসুলের নির্দেশে বেইমানির চরম পুরস্কার হিসেবে মদিনা থেকে বহিষ্কৃত হয়েছে। তাদের বংশ পরম্পরা আদি ইতিহাসের মতো ভিটাবাড়ি ছাড়া হয়ে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষুক ও অভিশপ্তের মত ফিরেছে। আর মুসলমানদের বিরুদ্ধে শত শত বছল ধরে চক্রান্তের জাল বিস্তার করে চলেছে।

যদিও খ্রিষ্টানদের সাথে ইহুদিদের ধর্মীয় বিদ্বেষ ও টানাপড়েন ছিল। তারপরও মুসলিম মিল্লাতকে খতম করার জন্য তারা উভয়ে এক সাথে কাজ করতে একমত হয়েছে। ইহুদিবাদের প্রধান ও প্রথম শত্রুই হল প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার উম্মত। মুসলমানদেরকে বিভ্রান্ত করতে, বাধা দিতে, রাসুলের জীবনকে বাধাগ্রস্ত করতে এ দুই ভ্রষ্ট জাতি ইহুদি ও খ্রিস্টানরা আদিকাল থেকেই তাদের অর্থ সামর্থ্যের বিপুল ভাণ্ডার অকপটে খরচ করছে ও করে আসছে। এজন্য আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআন মাজিদে ইহুদিদেরকে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করতে নিষেধ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন : তুমি অবশ্যই মুসলিমদের প্রতি শত্রুতায় মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা কঠোর পাবে ইহুদিদেরকে এবং সেই সমস্ত লোকদেরকে যারা প্রকাশ্যে শিরক করে। (সুরা মায়িদাহ: ৮২)

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#মহানবী (সা.) #ইহুদি