‘মাননীয়, স্যার’ সম্বোধনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে মারাত্মকভাবে চর্চিত হয়: অধ্যাপক মামুন | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

‘মাননীয়, স্যার’ সম্বোধনগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে মারাত্মকভাবে চর্চিত হয়: অধ্যাপক মামুন

অধ্যাপক মামুন বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব একদম সঠিক কথা বলেছেন। এইসব করে করেই কিন্তু আমরা তাদেরকে ভিন্ন জগতে নিয়ে যাই। এরপর তারা আর সাধারণ কিছু ভাবতে পারে না। কারণ সেই জগতে তারা কেবল আকাশ কুসুম সূর্য তারাই দেখে।

#কামরুল হাসান মামুন #স্যার #মাননীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেছেন, বিশেষ করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ‘মাননীয়, স্যার’ এইসব মারাত্মকভাবে চর্চিত হয়। এখানে প্রশাসনিক পদে যেমন ভিসি, প্রোভিসি যারা হোন তাদেরকে সম্বোধন করার আগে মাননীয়, স্যার ইত্যাদি প্রতিটি বাক্যের আগে, পিছে এবং মাঝেও দুই তিনটা বসিয়ে কথা বলতে হয়। কোথাও আসলে সম্মিলিতভাবে সবাইকে উঠে দাঁড়িয়ে যেতে হয়।

শুক্রবার নিজের ফেরিফাইয়েড ফেসবুক আইডির এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক মামুন বলেন, মির্জা ফখরুল সাহেব একদম সঠিক কথা বলেছেন। এইসব করে করেই কিন্তু আমরা তাদেরকে ভিন্ন জগতে নিয়ে যাই। এরপর তারা আর সাধারণ কিছু ভাবতে পারে না। কারণ সেই জগতে তারা কেবল আকাশ কুসুম সূর্য তারাই দেখে।

সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধনের নির্দেশনা বাতিল। তার মানে সরকারি পুরুষ কর্মকর্তাদের ‘স্যার’ সম্বোধন চলবেই। এখন কি তাহলে সরকারি নারী কর্মকর্তাদের ‘ম্যাডাম’ সম্বোধন চালু হবে? গত ৮ কিংবা ৯ জুলাই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের একটা কথা আমার কাছে দারুণ লেগেছে। তিনি বলেছেন যে ‘আমি যখন মন্ত্রী ছিলাম তখন কেন জেলার সার্কিট হাউসে গেলে প্রথমেই একটা গার্ড অফ অনার দিত আর সঙ্গে সঙ্গেই মনে হতো আমি একটা বিরাট কেউকেটা। মনে হতো আমার বুকটা ফুলে অনেক বড় হয়ে গেছে। এই যে ধারনাটা কিন্তু আমাকে একটা ভিন্ন জগতে নিয়ে যায়। তিনি আরো বলেছেন আমাদের কেউ একজন বড় কিছু হলেই তাকে গাড়ি দেয়া, সেই গাড়ির পেছনে একটা সামনে একটা পুলিশের গাড়ি, হুইশেল ইত্যাদি কিন্তু একজন মন্ত্রীকেও অন্য জগতে নিয়ে যায়। মাননীয়, মহামান্য ইত্যাদি সম্বোধনগুলো কিন্তু একজনকে ডিক্টেটরের দিকে নিয়ে যায়। এইসব সম্বোধন বাদ দিয়ে কথা বলতে পারলে ভালো হয়।’ একদম ঠিক। একজন রাজনীতিবিদের মাথায় এই ভাবনাটা আসাটা খুবই পজিটিভ। আসলে আমাদের স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ই এইসবের জন্য দায়ী।

অধ্যাপক মামুন বলেন, সম্মান হতে হয় অ্যাবস্ট্রাক্ট। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মত উচ্চ শিক্ষিত জায়গায় সম্মান কেনো একদম খোল্লাম-খোল্লাম করে এত চাক্ষুসভাবে দেখাতে হবে? হ্যাঁ, গ্রামে কোনো অনুষ্ঠান হলে, বা মসজিদে গিয়ে মুরুব্বিদের পার হয়ে যেতে হলে আমরা ঝুঁকে গিয়ে একটি হাত সামনে বাড়িয়ে এগোই। কিংবা আমি দেখেছি আমার অনেক ছাত্র সিগারেট খাচ্ছে। সে করবে কি আমার একদম সামনে এসে একদম নিশ্চিত করবে যে আমি দেখছি যে সে আমাকে দেখে আমাকে সম্মান দেখানোর জন্যই সিগারেট নিভিয়েছে।

অধ্যাপক মামুন আরো বলেন, এই সম্মানের কি মূল্য আছে। শিক্ষিতের মেলে সব কিছুই হবে এবস্ট্রাক্ট। আমি আমার পিএইচডি সুপার ভাইজার ও পোস্ট-ডক হোস্টকে নাম ধরে ডাকতাম ঠিক এখানে যেমন আমার বন্ধুদের ডাকি। তাদেরকে দেখে কখনো দাঁড়িয়ে যেতে হতো না। কিন্তু তাতে কি এখানে আমি আমার শিক্ষককে যতটা সম্মান করতাম তাদেরকে আমি তার চেয়ে একটুও কম সম্মান করতাম? বরং অনেক বেশি করতাম কারণ তারা সেই সম্মানটা অর্জন করেছে তাদের কাজ দিয়ে।

আমাদের সমাজ থেকে যতদিন না "স্যার", "মাননীয়", "মহামান্য" এইসব না উঠেছে ততদিন সমাজটা সুন্দর হবে না।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#কামরুল হাসান মামুন #স্যার #মাননীয়