কুমিল্লার মুরাদনগরে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের দায়ী করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শনিবার (২৮ জুন) গভীর রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে দেয়া এক পোস্টে আসিফ মাহমুদ লেখেন, ‘মুরাদনগরে সকল আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন, পুনর্বাসন এবং ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার, নির্যাতন, চাঁদাবাজি, ধর্ষণের উদ্দেশে ছেড়ে দিয়েছেন-আজকের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগেও চাঁদাবাজকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করায় থানায় হামলা চালিয়ে তাকে ছিনিয়ে নেয় এক মাফিয়ার বাহিনী। আমি আজ লজ্জিত, আমার বলার ভাষা নেই। এলাকার লোকজন বলেন, দেশ মুক্ত হলেও মুরাদনগর আজও বড় মাফিয়াদের দখলে।’আসিফ মাহমুদ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘স্থানীয় প্রশাসন ধর্ষকদের ধরতে কাজ করছে। তবে মূল মাফিয়াদের লাগাম টেনে না ধরলে সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।’
এদিকে শনিবার (২৮ জুন) দিবাগতরাত দেড়টার দিকে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীর ওপর ধর্ষণের ঘটনায় ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর পাঁচকিত্তা গ্রামে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত ফজর আলী (৩৮)। তিনি ওই গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে মারধর করলেও পরে সে পালিয়ে যায়।
ঘটনার সময় উপস্থিত কয়েকজন ব্যক্তি ভিকটিমের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়, যা নিয়ে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, খবর পেয়ে মুরাদনগর থানা পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পরদিন, শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে ভুক্তভোগী নারী মুরাদনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রুজু করা হয়।
মামলার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষক ফজর আলীকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে এবং ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া ব্যক্তিদের শনাক্ত করে। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারদের নাম-পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং ধর্ষককে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।