ফাইল ছবি
পবিত্র ঈদুল আজহা আসন্ন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে সারাদেশে লক্ষ লক্ষ পশু জবাই করা হবে। আমাদের দেশে প্রধানত গরু ও ছাগল কোরবানি দেওয়া হয়। সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয় শহরাঞ্চলে। কোরবানির দিনে অত্যন্ত জরুরি একটি বিষয় হলো জবাইকৃত পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।
এক দিনে লাখ লাখ পশু কোরবানি হওয়ার কারণে অন্য সময়ের তুলনায় কোরবানির দিনে এর গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। শহরে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইসলামেও এ বিষয়ে নানা নির্দেশনা দিয়েছে। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিবেশকে দূষণমুক্ত ও রোগ-ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।একজন মুসলমানের জন্য পবিত্রতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নামাজসহ অন্যান্য ইবাদতের জন্য শরীর, পোশাক ও স্থান পবিত্র হওয়া জরুরি। পর্যাপ্ত স্থানের অভাব ও নানা কারণে আমাদের দেশে সাধারণত বিভিন্ন অলিগলিতে পশু জবাই করা হয়। পশুর রক্ত, গোবর ও লাদা নাপাক। এই নাপাকগুলো প্রবাহিত হয়ে পুরো সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে পথচারী ও মুসল্লিদের পোশাক নাপাক হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। জুতোর সঙ্গে মিশে এই নাপাকি বাসাবাড়ি ও মসজিদেও চলে যেতে পারে। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। (মুসলিম শরিফ: ২২৩)
তা ছাড়া সড়কে মানুষ চলাচল করে। সড়কে বর্জ্য পড়ে থাকলে দূষিত বায়ুর কারণে মানুষের কষ্ট হয়। চলাচলের পথে আবর্জনা ফেলে নোংড়া করা গুনাহের কাজ। আর আবর্জনা সরিয়ে মানুষের চলাচলকে নির্বিঘ্ন ও আরামদায়ক করা সাওয়াবের কাজ। হজরত আবু যাররাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি বিষয় অবহিত করুন, যার সাহায্যে উপকৃত হতে পারি। তিনি বললেন, মুসলিমদের চলার পথ থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেবে। (মুসলিম শরিফ: ৬৫৬৭) অন্য হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঈমানের ৭৭টি শাখা আছে, তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো এই সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আর সর্বনিম্ন হলো রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। লজ্জাশীলতাও ঈমানের অঙ্গ। (নাসায়ি শরিফ: ৫০০৫)
উল্লিখিত হাদিসসমূহের মধ্যে রাস্তাঘাট পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠেছে। সুতরাং কোরবানির পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সড়ক পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার স্বার্থে আমরা সচেতন হব। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা কর্তৃক যেসব নির্দেশনা দেওয়া সেগুলো পালন করব। বিশেষ করে গোবর ও হাড় ইত্যাদি বস্তায় ভরে নির্দিষ্ট ডাস্টবিনে ফেলব। পর্যাপ্ত পানি ঢেলে সড়কের ওপর জমে থাকা রক্ত ও অন্যান্য আবর্জনা পরিষ্কার করে দিব। ক্ষেত্র বিশেষ জীবানুনাশক স্যাভলন ব্যবহার করব। নিজে পরিষ্কার থাকব, আঙিনা পরিষ্কার রাখব।