ইসরায়েলের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা | আন্তর্জাতিক নিউজ

ইসরায়েলের দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ সীজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

#ইসরায়েল #যুক্তরাজ্য #কানাডা

যুক্তরাজ্য, কানাডা ও অন্যান্য পশ্চিমা মিত্র দেশসহ মঙ্গলবার (১০ জুন) ইসরায়েলের দুই চরমপন্থী মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বারবার ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেয়ার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। ইসরায়েলের দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজায় ক্রমবর্ধমান নিন্দার মধ্যে এই যৌথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএস সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজ।

যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও সম্পদ সীজ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বেন গাভির ও স্মোত্রিচ উভয়েই ইসরায়েলের চরম ডানপন্থী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেন, যারা প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নাজুক জোট সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে। দখলকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা যুদ্ধ সম্পর্কে তাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য ও অবস্থানের জন্য উভয়ই সমালোচনার মুখে পড়েছেন।

অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে ও যুক্তরাজ্য—এই পাঁচ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতি অনুযায়ী, এই নিষেধাজ্ঞা যৌথভাবে কার্যকর করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নীতির সাথে এই নিষেধাজ্ঞা একটি বিচ্ছিন্নতা নির্দেশ করে। বিশেষকরে, ইউরোপীয় ও কমনওয়েলথ মিত্ররা নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর চাপ বাড়ালেও, ট্রাম্প প্রশাসন বারবার ইসরায়েল-মার্কিন জোট পুনর্ব্যক্ত করেছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানালেও গত সপ্তাহে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে।

বেন গাভির ও স্মোত্রিচ স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকেলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা তাদের এজেন্ডা চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন এবং ব্রিটেনকে ইহুদি অভিবাসনের ওপর ঔপনিবেশিক যুগের নিষেধাজ্ঞার পুনরাবৃত্তির অভিযোগ করেছেন।

ইহুদি পাওয়ার দলের নেতা বেন গভির বলেছেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আমাকে ভয় পাইয়ে দিতে পারবে না। হামাসকে মানবিক সহায়তা দেয়া বন্ধ করতে কাজ চালিয়ে যাবো।’

অন্যদিকে, স্মোত্রিচ দখলকৃত পশ্চিম তীরে নতুন ইহুদি বসতি মিৎজপে জিভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি শুনেছি ব্রিটেন আমাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কারণ আমি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে বাধা দিচ্ছি। এর চেয়ে ভালো সময় হতে পারত না। ব্রিটেন একবার আমাদের মাতৃভূমিতে বসতি স্থাপন করতে বাধা দিয়েছিল, আমরা তা আবার হতে দেব না।’

নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন স্যার বলেছেন, সরকার আগামী সপ্তাহের শুরুতে একটি বিশেষ সভা করে এই ‘অগ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্তের’ জবাব নির্ধারণ করবে।

যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজকের এই পদক্ষেপ ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি আমাদের অবিচল সমর্থন থেকে সরে আসে না এবং আমরা হামাসের ৭ অক্টোবরের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানাই। আজকের নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে, যারা আমাদের মতে, ইসরায়েলের নিজের নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক অবস্থানকে ক্ষুণ্ন করছে।

বেন গভির গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রতিবাদে গত জানুয়ারিতে নেতানিয়াহুর সরকার থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু মার্চে ইসরায়েল যুদ্ধে ফিরে এলে আবার মন্ত্রিত্ব নেন। তিনি বারবার গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বের করে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বলেছেন, ইসরায়েলের উচিত ‘গাজাবাসীদের বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বেচ্ছা অভিবাসনে উৎসাহিত করা।’

অর্থমন্ত্রী স্মোত্রিচ, যিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তা ক্যাবিনেটের সদস্য এবং নেতানিয়াহুর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখেন, তিনি পূর্বে দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতিগুলোর আনুষ্ঠানিক অন্তর্ভুক্তির দাবি করেছেন। গত মে মাসে তিনি বলেছিলেন, গাজায় তার জয়ের ধারণা হলো—এলাকাটি ‘ধ্বংস’ হয়ে যাবে এবং বেসামরিক জনগণকে গাজার দক্ষিণে একটি ‘মানবিক অঞ্চলে’ স্থানান্তর করা হবে বা তৃতীয় দেশে চলে যেতে হবে।

গত মাসে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি স্মোত্রিচের গাজা ধ্বংস ও বাসিন্দাদের বিতাড়নের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের বলেন, ‘এটি চরমপন্থা, বিপজ্জনক, ঘৃণ্য, নৃশংস এবং আমি সর্বোচ্চ শক্তিতে এটির নিন্দা করছি।’

সেই সময়, যুক্তরাজ্য ইসরায়েলের সাথে বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছিল এবং পশ্চিম তীরের বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, তবে চরম ডানপন্থী ইসরায়েলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিয়োগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#ইসরায়েল #যুক্তরাজ্য #কানাডা