অনেকেই আছেন গাড়িতে চড়লে বমি করেন বা বমি বমি ভাবের জন্য অস্বস্তিকর অবস্থায় থাকেন। বাস, কার, ট্রেন বা উড়োজাহাজে যাত্রাকালে অসুস্থতাকে মোশন সিকনেস বলে।
যে কারণে ভ্রমণে বমি হয়?
বমির জন্য দায়ী আমাদের অন্তঃকর্ণের সমন্বয়হীনতা। চলন্ত বাসের ঝাঁকুনিতে আমাদের কানের ভেতরের ফ্লুইড নড়াচড়া করে; যার কারণে অন্তঃকর্ণ ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি মুভ করে। এদিকে আমাদের চোখ আবার ব্রেইনকে ইনফরমেশন দেয়, বডি স্থির আছে। শরীর নড়াচড়া করছে না। দুই রকম ইনফরমেশনের জন্য মস্তিষ্কের সমন্বয়হীনতার সৃষ্টি হয়। এ ধরনের অবস্থাকে ব্রেইন বিষ হিসেবে শনাক্ত করে। বিষকে বডি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য যাত্রাকালে বমি হয় বা বমি বমি ভাব হয়।বমির সমস্যা প্রতিরোধে করণীয়
বাসে বসে ঘুমিয়ে গেলে বমি আসে না। কারণ চোখ তখন ইনফরমেশন দেয় না। ফলে ব্রেইনে কোনো কনফিউশন তৈরি হয় না। ঘুম না এলেও হালকাভাবে দুই চোখ বন্ধ রাখুন অথবা একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব নিয়ে আসুন। উপকারে আসবে।
এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে সামনের দিকে বা জানালার কাছে আসন নিন। জানালাটা খুলে দিন। শরীরে বাতাস লাগলে ভালো লাগবে।
যাদের এ সমস্যা আছে, তারা যাত্রা শুরুর আগে ভরপেট খাবেন না।
কিছু ওষুধ আছে, যেগুলো বমি বা বমি ভাব বন্ধ করতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শমতো বমি ভাব দূর করার জন্য বাহনে ওঠার আগে এ ধরনের ওষুধ খেয়ে নিতে পারেন।
গাড়িতে বসে আদা কিংবা চুইংগাম চিবালেও উপকার পাওয়া যায়।
গাড়িতে উঠলেই আমার বমি হবে– এমন চিন্তা মনে আনা যাবে না। যাদের এ সমস্যা আছে, তারা ব্যাগে কয়েকটা লেবুপাতা রাখতে পারেন এবং গাড়িতে চড়ে তা নাকের কাছে ধরতে পারেন।
গাড়িতে আড়াআড়িভাবে বা যেদিকে গাড়ি চলছে, সেদিকে পেছন দিয়ে বসবেন না। এতে বমি বা বমি বমি ভাবের আশঙ্কা থাকে। গাড়ি যেদিকে মুখ করে এগোচ্ছে, তার বিপরীত দিকে মুখ করে থাকা শুধু মোশন সিকনেসই দেবে না, তা বিপজ্জনকও। এ ছাড়া অনেক গাড়িতে বিপরীতমুখী সিট থাকে, আপনার যদি ঘন ঘন মোশন সিকনেস হয়, তাহলে সেসব সিটে বসবেন না। এ ছাড়া পেছনের সিটে বসা থেকেও বিরত থাকতে হবে। যানবাহনের পেছনের অংশ বেশি ঝাঁকি খায়, তা থেকে মোশন সিকনেস হতে পারে।
লেখক : নাক-কান-গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ