প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে হুমকির মুখে পড়েছে বাংলাদেশের পোল্ট্রি শিল্প। হিটওয়েভে প্রতিনিয়তই মারা যাচ্ছে মুরগি, অন্যদিকে ডিমের উৎপাদনও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।
ময়মনসিংহের ভালুকার শহিদুল শিকদারের ১৫০টি শেডে ব্রয়লার মুরগি আছে প্রায় ২ লাখ। প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই দুই থেকে আড়াই হাজার মুরগি হিটস্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। বড় এই খামারির প্রায় ৮০ হাজার ডিম পারা লেয়ার মুরগি রয়েছে। অতিগরমে প্রতিদিনের ডিমের উৎপাদনও ৫ থেকে ৭ শতাংশ কমেছে বলে জানান তিনি।
এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনের দিনগুলোতে ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের সরবরাহে সংকট তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন খামারিরা। এরই মধ্যে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলমান তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি আরো দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
খামারিরা বলছেন, ব্রয়লার মুরগির জন্য স্বাভাবিক সহনীয় তাপমাত্রা ২৪-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সারাদেশে এখন দিনের তাপমাত্রা থাকছে ৩৮-৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। এই অবস্থায় পর্যাপ্ত ফ্যান ব্যবহার করেও হিট স্ট্রোকের হাত থেকে মুরগিকে বাঁচানো যাচ্ছে না। যাদের জেনারেটর ব্যবস্থা রয়েছে এবং যাদের নেই– দুই ধরনের খামারই অতি তাপমাত্রার সমস্যায় ভুগছে। কারণ ফ্যান চালিয়ে বাড়তি এই তাপ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। কেবল যেসব প্রতিষ্ঠানে কন্ট্রোলড শেড রয়েছে তাদেরকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে না।
প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ) এর সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘একদিকে প্রান্তিক খামারিরা মুরগির বাচ্চা পাচ্ছে না কর্পোরেটদের থেকে। অন্য যারা আছেন, তাদেরও গরমে অবস্থা খারাপ, সারাদেশ থেকেই হিটস্ট্রোকে মুরগি মরে যাওয়ার খবর পাচ্ছি।’
বিপিএ'র পক্ষ থেকে অবশ্য তাপপ্রবাহ মোকাবেলায় বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে খামারিদের। এর মধ্যে রয়েছে—শেডে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা, ধারণক্ষমতার চেয়ে কম মুরগি রাখা, পানিতে ভিটামিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার না করা, মুরগির গায়ে স্প্রে করা, শেডের ওপর পাটের ভেজা চট রেখে তাতে নিয়মিত পানি দেওয়া এবং দুপুরে খাবার বন্ধ রাখা।