![জাল সনদে অধ্যক্ষ, ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ জাল সনদে অধ্যক্ষ, ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ](https://www.amaderbarta.net/media/imgAll/2022December/-সনদে-অধ্যক্ষ-৭০-লাখ-টাকা-আত্মসাৎ-2309181554.jpg)
১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন তিনি। প্রায় চার বছর আগে বাগিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষের পদও। কিন্তু তার সনদ জাল। দীর্ঘ ২৬ বছর শিক্ষকতার পর অবশেষে বিষয়টি চাউর হয়েছে। এমপিওভুক্ত হয়ে ২৬ বছরে সরকারের ৭০ লাখ টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
দৈনিক আমাদের বার্তার অনুসন্ধানে জানা যায়, অধ্যক্ষের নাম মাহবুবুল হক ভূঞা। তিনি রাজধানীর শান্তিবাগ এলাকার ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজে কর্মরত। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে ওই প্রতিষ্ঠানেই কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ের প্রভাষক পদে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষক ও গবেষণা একাডেমি (নেকটার) জানিয়েছে, তার কম্পিউটার সনদটি জাল।
প্রতিষ্ঠান সূত্র বলছে, মাহবুবুল হক ভূঞা ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে এমপিওভুক্ত হন। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে কিছু সময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে ওই বছরের শেষ দিকে নিয়মিত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগের সময় জমা দেয়া তার কম্পিউটার সনদটি নিয়ে আগের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ তুললে তা ওই বছরই জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষক ও গবেষণা একাডেমিতে (নেকটার) যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর যাচাই প্রতিবেদন পাঠিয়েছে নেকটার। নেকটারের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মুহাম্মদ মাহমুদুর রহমান স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, মাহবুবুল হক ভূঞার (পিতা : মো. ফিরোজ উদ্দিন, সনদ ও রেজি নং ১৫৩০) সনদটি জাল। নেকটার বা সাবেক নট্রামস সনদটি ইস্যু করেনি।
প্রতিষ্ঠানটির একজন সাবেক শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তা বলেন, তিনি জাল সনদে এমপিওভুক্ত হয়ে ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ৭০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে অধ্যক্ষ মাহবুবুল হক ভূঞার সঙ্গে দৈনিক আমাদের বার্তার পক্ষ থেকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি। জাল সনদের চাকরি নিয়ে এমপিওর টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
জানা গেছে, মাহবুবুল হক ভূঞার কম্পিউটার বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সময় প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ছিলেন ড. মো. জহিরুল ইসলাম সিকদার। জানতে চাইলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে তিনি বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলাম। তখন কলেজটি ছিলো ননএমপিও। তখন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তিনি আবেদন করে নির্বাচিত হলে সনদ আলাদা করে যাচাই করা হয়নি। পরে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে আমি অবসরে যাওয়ার আগে তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছিলো। তার প্রতিবেদনের অনুলিপি আমার কাছেও এসেছে। এতে জানানো হয়েছে, তার সনদটি ভুয়া।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে ঢাকা সিটি ইন্টারন্যাশনাল কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক আবু আব্দুল হকের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।