ঢাকা শনিবার, ০৪ মে ২০২৪ , ২০ বৈশাখ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

উইলিয়াম শেকসপিয়র এর প্রয়াণ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

সর্বশেষ

উইলিয়াম শেকসপিয়র এর প্রয়াণ

বিখ্যাত ইংরেজ সাহিত্যিক উইলিয়াম শেক্সপিয়রের জন্ম–মৃত্যুর মাস এই এপ্রিল। এপ্রিলে জন্ম এবং মৃত্যুবরণ করা এই সাহিত্যিকের জীবন তার সাহিত্যের মতোই বৈচিত্র্যপূর্ণ। শেক্সপিয়রকে ব্যাপটাইজ করা হয় ১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ এপ্রিল।

সাধারণত শিশু জন্মের তিন দিন পর এটা করা হতো বলে ধারণা করা হয়। সেই হিসেবে তার জন্ম ১৫৬৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে। ১৫৮৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত জন্মস্থান স্ট্রাটফোর্ড-অন-অ্যাভন-এ শেক্সপিয়ারের শিক্ষাজীবন, বিয়েসহ অন্যান্য বিষয়ে জানা গেলেও তার জীবনের সাতটি বছর (১৫৮৫—১৫৯২) সম্পর্কে কিছুই জানা যায় না। তার জীবনের এই সময়কালকে গবেষকরা ‘লস্ট ইয়ারস’ বা ‘হারানো বছরসমূহ’ বলে অভিহিত করেন।

কোনো কোনো জীবনীকারের ভাষ্যে, ওই সময় তিনি ফেরারি ছিলেন। আর তার অপরাধটি কী ছিলো? প্রতিবেশীর সীমানায় হরিণ শিকার। বলাবাহুল্য, সে সময় একে অনেক বড় অপরাধ গণ্য করা হতো। কারো কারো মতে, এই সময় শেক্সপিয়ার এক কসাইয়ের সহকারী কিংবা একজন শিক্ষক অথবা পাদরি কিংবা এক আইনজীবীর কেরানি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।
প্লেগের প্রাদুর্ভাবের কারণে ১৫৯৩ খ্রিষ্টাব্দের জানুয়ারিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয় লন্ডনের অনেক থিয়েটার ও জনসমাগমের কেন্দ্র।

শেক্সপিয়ার ততদিনে একজন অভিনেতা ও নাট্যকার হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। এই সময়ে তিনি রচনা করেন দুটি দীর্ঘ কবিতা এবং তা উৎসর্গ করেন সাউদাম্পটনের তৃতীয় আর্ল হেনরি রিওথেসলিকে। ধারণা করা হয়, এই আর্লই শেক্সপিয়ারের সনেটগুলোতে বারবার উদ্দিষ্ট সুদর্শন অনামা যুবক।

মাত্র এক বছরে ‘মাচ অ্যাডো অ্যাবাউট নাথিং’, ‘অ্যাজ ইউ লাইক ইট’, ‘জুলিয়াস সিজার’, ‘দ্য মেরি ওয়াইভস অব উইন্ডসর’—নাটকগুলো লেখেন শেক্সপিয়ার। ১৬০১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রচনা করেন তার সবচেয়ে বিখ্যাত নাটক ‘হ্যামলেট’। ‘টু বি অর নট টু বি’ এই নাটকেরই উক্তি। অনেকেরই ধারণা, এটি শেক্সপিয়ারপুত্র হ্যামনেটের শোকের ছায়া। ১৫৯৬ খ্রিষ্টাব্দে মাত্র ১১ বছর বয়সে হ্যামনেট অজানা রোগে মৃত্যুবরণ করেছিলো। আবার হ্যামলেট রচনার বছরেই তার বাবাও মৃত্যুবরণ করেন। কেউ কেউ বিশ্বাস করেন, ‘সাহিত্যের প্রথম আধুনিক মানুষ’ হ্যামলেট-এর মধ্য দিয়ে পিতার মৃত্যুতে শোকাতুর পুত্রের বিষণ্নতা প্রকাশ পেয়েছে।

মার্চেন্ট অব ভেনিস–এর সওদাগর চরিত্র অথবা আদালতের সেই যুক্তি–তর্কের খেলা, ওদিকে হেনরি এইট আর দ্য মেরি ওয়াইভস অব উইন্ডসর—নাটক দুটির সেই চিকিৎসক চরিত্রগুলোকে মনে আছে? সম্প্রতি ধারণা করা হচ্ছে, লন্ডনে শেক্সপিয়ারের প্রতিবেশীরা তার সৃষ্ট এই রকম বৈচিত্র্যময় চরিত্রগুলোর উৎস। চিকিৎসক, সংগীতশিল্পী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার এই প্রতিবেশীরা একসময় ইউরোপের বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্রগুলোতে যাতায়াত করতেন। চিন্তায় তারা ছিলেন আধুনিক। প্রতি সপ্তাহেই গির্জায় তাদের সঙ্গে দেখা হতো শেক্সপিয়ারের।

তাই এই ধারণাকে উড়িয়ে দেয়ার জো নেই। অন্যদিকে, এই নাট্যকারের অনেক জীবনীকারই বিভিন্ন সময়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন, আদৌ শেক্সপিয়ারের নাটকগুলো তার রচিত কি না। তাহলে সেগুলো কারা রচনা করেছেন? এই অনুমানের তালিকায় প্রায় অর্ধশত লেখকের মধ্যে এসেছে স্যার ফ্রান্সিস বেকন, ক্রিস্টোফার মার্লো; এমনকি রানি এলিজাবেথেরও নাম।
তথ্য সংগ্রহের সুযোগ যে যুগে সীমিত, সেই সময় শেক্সপিয়ার যেমন দ্রুত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতেন, তেমনি নতুন নতুন শব্দ ও প্রবাদপ্রতিম বাক্য তৈরি করতেন।

তিনি ৩০০-এর বেশি নতুন শব্দ তৈরি করেছেন; অ্যামেজমেন্ট, ইউজফুলসহ যার অনেকই আজও ব্যবহৃত হয়। একজন সাধারণ মানুষ গড়ে ২ হাজার শব্দ ব্যবহার করেন, শেক্সপিয়ারের লেখায় এই সংখ্যা ২৫ হাজারের বেশি। তার ব্যবহৃত ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার’, ‘যা হয়ে গেছে তা তো হয়েই গেছে’, ‘বেশি ভালো ভালো নয়’ এমন বাক্যগুলো আজও বহুল ব্যবহৃত।

১৬১৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে মৃত্যুর পরের ৪০০ বছরে অন্য যেকোনো লেখকের চেয়ে শেক্সপিয়ারের রচনা সবচেয়ে বেশি পঠিত, অভিনীত, অনূদিত ও চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। বাংলাসহ কমপক্ষে ৮০টি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে তার লেখা। বাংলায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শেক্সপিয়ার রচিত ‘কমেডি অব এররস’-এর অনুবাদ করেন ‘ভ্রান্তিবিলাস’ নামে। এর অনেক পরে মুনীর চৌধুরী ‘টেমিং অব দ্য শ্রু’ নাটকের বাংলা অনুবাদ করেন ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ নামে।

জনপ্রিয়