ঢাকা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না 

মতামত

মো. সিদ্দিকুর রহমান

প্রকাশিত: ০০:৪০, ৯ মে ২০২৪

সর্বশেষ

প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না 

শিক্ষার মান উন্নয়নসহ শিখন ঘাটতি দূর করার প্রধান জনবল শিক্ষক। শিক্ষক সমাজ দেশ ও জাতির হৃৎপিণ্ড। এই হৃৎপিণ্ড মেধাবীসহ চরিত্রবান না হলে শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত ঘাটতি পূরণ না হয়ে, জাতি হয়ে উঠবে মেধাহীন, অসৎ ও চরিত্রহীন। এতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে জাতির পিতার শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণের অগ্রযাত্রা। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন মেধাবী, সৎ ও চরিত্রবান শিক্ষক। শিক্ষক নিয়োগে প্রশ্ন ফাঁস ও দুর্নীতির খেলা যদি বারবার চলে, তাহলে শিখন ঘাটতিসহ মানসম্মত শিক্ষা হোঁচট খেতে বাধ্য।

আমরা দেখেছি, স্বাধীন বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি শুরু হয়েছিলো শিক্ষা উপদেষ্টা ড. মজিদ খানের সময়ে। তিনি ‘Yes’ লিখে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের সূচনা করেছিলেন। পরবর্তীতে উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মহোৎসব চলে। নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও মেধাবীদের প্রাথমিক শিক্ষক হিসেবে আনার অভিপ্রায়ে তৎকালীন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পরামর্শক্রমে মরহুম প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগবিধি প্রবর্তন করেন। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন ফাঁস ছাড়া মেধাহীনদের শিক্ষকতা পেশায় আসার কোনো সুযোগ নেই।

নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সংরক্ষিত থাকে কর্মকর্তাদের কবজায়। বারবার প্রাথমিকের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে অযোগ্য অসৎ চরিত্রের জনবল শিক্ষকতা পেশায় এসে শিক্ষাব্যবস্থাকে কলঙ্কিত ও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টরা আসছেন আর যাচ্ছেন। তাদের প্রাথমিক শিক্ষার এ অশুভ চক্রান্ত নিয়ে ভাবনা দৃশ্যমান নয়। তাদের ভাবনায় দৃশ্যমান হচ্ছে, ভালো স্থানে পোস্টিং। এ জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গুণগান করে স্বার্থসিদ্ধি করে চলেছেন।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নিয়ে অনেক হৈচৈ, হাঁকডাক, লম্ফজম্ফ প্রিন্ট, অনলাইন মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কয়েকদিন ধরে সরব ছিলো। এই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত কতিপয় ব্যক্তিকে গ্রেফতারের ঘটনাও ঘটেছে। তাই প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি দিনের আলোর মতো স্বচ্ছ। কিন্তু, প্রশ্ন ফাঁসের সব তথ্য প্রমাণাদি মিডিয়া  আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তর রহস্যজনকভাবে নীরব। তারা বরং তড়িঘড়ি করে মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই তড়িঘড়ি কার্যক্রম, নীরবতা, না দেখা বা না শোনার ভান সচেতন মানুষদের ভাবনায় এনে দিচ্ছে ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়’ ধারণা।

কারণ, অতীতেও প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তরা শিক্ষক, শিক্ষকতা নামের পবিত্র পেশার অনৈতিক কর্মের পুরোপুরি অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। শিক্ষকতার মতো মহান পেশা জাতিকে স্বপ্ন দেখাবে। কিন্তু, প্রশ্নফাঁসের নিয়োগপ্রাপ্তরা জাতির জন্য দুঃস্বপ্নের বার্তা নিয়ে আসবে। কলঙ্কিত শিক্ষকে ভরে উঠবে শিক্ষাঙ্গন। তাই এ প্রক্রিয়ার এখন অবসান অতীব জরুরি হয়ে উঠেছে।  
 

লেখক:  সভাপতি, বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা গবেষণা পরিষদ

জনপ্রিয়