জ্ঞাত আয় বহির্ভূত প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করার অভিযোগে পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের প্রভাষক মোছা. শাহীনুর আয়েশা সিদ্দীকার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত সোমবার মামলার এজাহার দৈনিক আমাদের বার্তার হাতে আসার পর এ তথ্য নিশ্চত হওয়া গেছে।
প্রাথমিক তদন্তে তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় মামলা নেয়ার সুপারিশ করে পাবনা দুর্নীতি দমন কার্যালয়। পরে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় গত ৭ মার্চ মামলার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। গত ১৪ মার্চ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
আয়েশা সিদ্দীকা গত ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ১১ অক্টোবর চাটমোহরি ডিগ্রি কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগদান করে এখনো কর্মরত আছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মোছা. শাহীনুর আয়েশা সিদ্দীকার কাছে পাবনা দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৬ ডিসেম্বর সম্পদের হিসাব চায়। তিনি গত ২৭ ডিসেম্বর সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। ২০২৩-এর ৩০ জানুয়ারি তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয় উপপরিচালক একেএম তানভীর আহমেদকে নিয়োগ করে।
পরে তদন্তে বেরিয়ে আসে তিনি নিজ নামে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ২ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন।
এদিকে তিনি তার কলেজ থেকে বেতন-ভাতা বাবদ মোট আয় করেছেন ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৬২ টাকা। আয়কর নথি অনুযায়ী ২০২২-২৩ করবর্ষ পর্যন্ত তার মোট পারিবারিক ও অন্যান্য ব্যয় ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫৬৫ টাকা।
তার মোট অর্জিত সম্পদ ও পারিবারিক ব্যয় ১ কোটি ২৮ লাখ ১৫ হাজার ৫৬৫ টাকা। যার বিপরীতে তার মোট আয় ২৭ লাখ ১৮ হাজার ৬২ টাকা।
অর্থাৎ তার মোট গ্রহণযোগ্য আয় থেকে মোট অর্জিত সম্পদ ও পারিবারিক ব্যয় ১ কোটি ৯৭ হাজার ৫০৩ টাকা বেশি।
অর্থাৎ তিনি নিজ নামে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৯৭ হাজার ৫০৩ টাকা অর্জন করেছেন যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অভিযুক্ত মোছা. শাহীনুর আয়েশা সিদ্দীকা অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭ (১) ধারায় একটি মামলা করার জন্য বলা হয়।
এদিকে জানা যায়, এ মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তদন্তকালে তার আরো সম্পদ পাওয়া গেলে এবং অন্য কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তা এই মামলার আমলে আনা হবে বলেও জানানো হয়।