সনদ বাণিজ্যের অভিযোগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সদ্য অপসারিত চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। আলী আকবর খানকে আজ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।
গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর-রশীদ। ডিবি প্রধান বলেন, সনদ জালিয়াতির সঙ্গে আলী আকবর খানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে, গত শনিবার সনদ-বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে আলী আকবর খানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেফতার করা হয়। গত রোববার তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত। স্ত্রীকে গ্রেফতারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকেও গত রোববার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয় এবং তাকে ওএসডি করে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়।
জাল সনদ প্রিন্ট (ছাপা) ও বিক্রির অভিযোগে আটক হওয়া কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী এ কে এম শামসুজ্জামানের জবানবন্দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুজন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের আটজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ এসেছে। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে?
জবাবে হারুন অর-রশীদ বলেন, পুলিশ, সাংবাদিক, দুদক—সবাইকে তো মানুষ ভয় পায়। আমরা যদি কারো পক্ষে থাকি, সেই মানুষগুলো সাহসী হয়। সিস্টেম অ্যানালিস্ট ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে যা যা বলেছেন, তা আপনারা অনেকেই শুনেছেন। যাদের নাম এসেছে, পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে।
হারুন অর-রশীদ আরো বলেন, সকলের সঙ্গে কথা বলে তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মামলাটি শেষ করা হবে। চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্বে অধ্যাপক মামুন এদিকে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আইসিটি পরিচালক ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা মো. মামুন উল হককে বোর্ডের চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গতকাল সোমবার মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানা গেছে। প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রীর সনদ বাণিজ্যের ঘটনায় সন্দেহের তালিকায় থাকায় চেয়ারম্যান মো. আলী আকবর খানকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, সাধারণত চেয়ারম্যান ওএসডি হলে বা অন্য কোনো ঘটনা ঘটলে বোর্ডের সচিবকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু কারিগরি বোর্ডের সচিব মে. মিজানুর রহমানও সনদ বাণিজ্যের সন্দেহে নজরদারিতে আছেন। এ কারণে তাকে কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়নি।