ঢাকা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ , ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ 

জাতীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ০০:০০, ৫ মে ২০২৪

সর্বশেষ

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ 

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহ আজমের বিরুদ্ধে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ, প্রাপ্যতার অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যবহার ও ভ্রমণ বিল নেয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো অভিযোগে দেখা যায়, তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অতিথি বা বক্তা হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানী উত্তোলনও করেন এবং গুচ্ছভর্তি (জিএসটি) পরীক্ষার ফি বাবদ আদায় হওয়া তিন কোটি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের পরিবর্তে ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে রেখে আর্থিক সুবিধা নিচ্ছেন। তবে এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন উপাচার্য শাহ আজম।

অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের ১৮ মে প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক পদে একটি শূন্যপদ উল্লেখ থাকলেও নিয়োগ দেয়া হয় তিনজনকে। তারা হলেন শামসুদ্দিন সরকার, মোছা. ইসরাত জাহান ও এস এম আসরাফ হোসেন। তিনজনই রাজশাহীর বাসিন্দা এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। একইভাবে গত বছরের ১৮ জুলাই সংগীত বিভাগের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রভাষক পদে একটি শূন্যপদের কথা উল্লেখ থাকলেও নিয়োগ দেয়া হয় দু’জনকে। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন-বুলবুল আহমেদ ও তন্ময় কুমার পাল। তারাও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বাংলা বিভাগেও নিয়োগ দেয়া হয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইবিএসের শিক্ষার্থী নূর-ই-নুসরাতকে। প্রতিটি নিয়োগেই আর্থিক লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘বাড়তি নিয়োগ হলে তা দেখবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। নিয়োগ বোর্ডগুলোতে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষকের নিয়োগ ছিল। সেখানে সহকারী অধ্যাপক পদে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক। ফলে প্রভাষক পদ খালি হওয়ার পর সেখানে নতুন নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বাড়তি নিয়োগ হয়নি।’ 
এদিকে, রেজিস্ট্রার মো. সোহরাব আলী তার শেষ কর্মদিবসে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ দেন মো. রফিকুল ইসলামকে। একইভাবে বাবুর্চি পদে নিয়োগ দেয়া হয় মো. রাজু আহমেদকে। তাদের বাড়িও রাজশাহী। উপাচার্যের নির্দেশেই রেজিস্ট্রার এই নিয়োগ দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপাচার্য হিসেবে যোগদানের সময় অধ্যাপক শাহ আজমের মোটা অঙ্কের ব্যক্তিগত ব্যাংক ঋণ ছিলো। উপাচার্য হওয়ার পর স্বল্পসময়ে তিনি তা পরিশোধ করেন। এ ছাড়া গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার ফি বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাবে জমা না করে ব্যক্তিগত হিসাব নম্বরে জমা করেন। 
তবে, ভিসির দাবি তার নামে কোনো লোন ছিলো না। 

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের চলতি বছরের সংশোধিত বাজেট ও আগামী বছরের মূল বাজেট পর্যালোচনায় ইউজিসির একটি টিম গত ২২-২৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে। টিমের নেতৃত্বে ছিলেন ইউজিসির অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপপরিচালক (বাজেট) এমদাদুল হক। এই টিম বিল ভাউচার পরীক্ষা করে উপাচার্যের গাড়িতে সীমার অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যবহারের তথ্য পেয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়। সূত্রের অভিযোগ, গাড়িতে মাসে সর্বোচ্চ ২০০ লিটার জ্বালানি ব্যবহারের কথা থাকলেও উপাচার্য ৪০০ থেকে ৫০০ লিটার জ্বালানি ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে ইউজিসি টিমের প্রধান মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

ইউজিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্ধারিত সিলিংয়ের অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যবহারের সুযোগ নেই।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘নির্ধারিত সিলিংয়ের বেশি জ্বালানি ব্যবহার বিধিসম্মত নয়।’ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি। উপাচার্য বলেছেন, তিনি এতো বেশি জ্বালানি ব্যবহার করেননি।

২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বরে উপাচার্য পদে চার বছরের জন্য নিয়োগ পান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহ আজম। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিক তার ক্যাম্পাসে অবস্থান করার কথা। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, তিনি মাসে অল্প কয়েক দিন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। বাকি সময় দাপ্তরিক কাজের কথা বলে বাইরে থাকেন। অথবা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যান। এসব ভ্রমণের জন্য তিনি টিএ/ডিএ নেন। তবে টিএ/ডিএসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান, সেমিনার ও কর্মশালায় অতিথি বা আলোচক হয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে সম্মানী গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করেন উপাচার্য।

জনপ্রিয়