
ছবি : সংগৃহীত
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের পৈতৃক বাস ভবনে হামলা অগ্নিসংযোগসহ তাণ্ডবের ঘটনায় কোতোয়ালি থানার ওসি মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় ছাত্র সমাজের কেন্দ্রীয় সদস্য সদস্য সচিব আরিফ আলী। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা রেকর্ড করা না হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য ওসি দায়ী থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।
শুক্রবার (৩০ মে) রাত ১১টার দিকে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জাতীয় পার্টি নেতা মিলন ও মোকাম্মেল হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতৃবৃন্দ তার সঙ্গে ছিলেন।
মামলায় রংপুর মহানগর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মহানগর সমন্বয়ক ইমতিয়াজ আহাম্মেদ ইমতি, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা নাহিদ হাসান খন্দকারসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৫০/৬০ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আরিফ আলী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে আমিসহ জাতীয় পার্টির কয়েকজন নেতা মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় জি এম কাদেরের বাস ভবনে তাণ্ডবের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে ওসি আতাউর রহমান এক ঘণ্টারও বেশি সময় বসিয়ে রেখে টালবাহানা শুরু করেন। একপর্যায়ে ওসি মামলা রেকর্ড করতে পারবেন না বলে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন।
তার অভিযোগ, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে যেভাবে পুলিশ আওয়ামী লীগের কথা ছাড়া মামলা গ্রহণ করতো না। এখন ৫ আগস্টের পর আবারও একই কাজ করছে।
আরিফ আলী দাবি করেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রংপুরে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। এ জন্য ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ১৭ দিন কারাগারে আটক থাকার পর ৫ আগস্টে তিনি মুক্তি পান। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে তার ভূমিকা রংপুরবাসী সবাই জানে। তা ছাড়া জাতীয় ছাত্র সমাজ রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারের যোদ্ধা ছিল।
ছাত্র সমাজের এই নেতা অভিযোগ করেন, শুক্রবার জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের ঢাকা থেকে রংপুরে আসেন। তিনি নগরীর সেনপাড়ায় তার পৈতৃক বাস ভবন স্কাই ভিউতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তিনিও দলের চেয়ারম্যানের সফর সঙ্গী হিসেবে তার বাসভবনে ছিলেন। রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বহিষ্কৃত কয়েকজনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা জি এম কাদেরের বাস ভবনে কাটা রাইফেল, ককটেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা জি এম কাদের যে কক্ষে ছিলেন সেখানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে জানালার কাচ ভেঙে ফেলেন। জি এম কাদেরকে হত্যা করার উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাস ভবনের সামনে থাকা মোটরসাইকেলে গান পাউডার ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রাইফেল দিয়ে গুলি বর্ষণ করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, কোতোয়ালি থানার ওসি মামলা না নিয়ে নানান টালবাহানা করেন। এত বড় ঘটনার যদি মামলা নেওয়া না হয় তাহলে আইনের শাসন থাকে কোথায়? তিনি ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন- এই সময়ের মধ্যে মামলা রেকর্ড করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে আবারও ওসির কাছে গেলে তিনি লিখিত অভিযোগটি গ্রহণ করে বলেন, আমরা বিষয়টি দেখবো।
এ বিষয়ে রাত পৌনে ১২টার দিকে ওসি আতাউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগটি নিয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।