চুয়াডাঙ্গায় টানা কয়েক দিন ধরে ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে। পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জের প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সোমবার বেলা ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪৩ ডিগ্রি। একই সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ১৩ শতাংশ। দক্ষিণ-পশ্চিমের এই জেলায় এই মৌসুমে এটি সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, গতকালও সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডটি চুয়াডাঙ্গার। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে এপ্রিল মাসে এ পর্যন্ত ১২ দিন চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ী এই জেলায় ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ মে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর গত ১০ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো গত বছরের ১৯ ও ২০ এপ্রিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের ২২ মে ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ও ২২ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ৩ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ জুন ৩৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ এপ্রিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ এপ্রিল ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ও ২৫ এপ্রিল মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র দাবদাহ ও ভাপসা গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। এতে কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। মানুষের পাশাপাশি এই দাবদাহে ভালো নেই প্রাণিকুলও। তীব্র দাবদাহ থেকে রেহাই পেতে পথেঘাটে, ফুটপাতের নোংরা পানিতে বা নালা-নর্দমায় সময় কাটাতে দেখা গেছে ভাসমান অনেক প্রাণীকে।
পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি স্কুল শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ জানান, খাদ্য সংকটের পাশাপাশি তীব্র দাবদাহে প্রাণিকুলের অবস্থাও নাজুক। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ায় বিভিন্ন নালা-নর্দমায় গা ভিজিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায় বেওয়ারিশ কুকুরসহ বিভিন্ন প্রাণীকে।