আমাদের শিক্ষকতা জীবনটা বিপন্ন করে দিয়েছে মুনাফালেহী শিক্ষা সনদবিতরণকারী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বছর খানেক আগে এক কলেজে মাস্টার্সের ভাইভা নিতে গিয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন করেছিলাম, ‘চিন্তার স্বাধীনতা ও বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন পর্বে আমরা দু’জন ওয়াজেদ আলীকে পেয়েছিলাম, কী কী নামে তাদের পেয়েছিলাম? ১২০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪০ জনকে একই প্রশ্ন করে জবাব পাওয়ার চেষ্টা করেছি। একবার বলেও দিলাম একজনকে।’ একজন এস ওয়াজেদ আলী, অপরজন মোহাম্মদ ওয়াজেদ আলী’। কিন্তু, তিনি এটা স্মৃতিতে বহন করে সহপাঠীদের কাছে পাচার করতেও পারেননি। তাকে উত্তর বলে দেবার পরের পনেরোজনও এ প্রশ্নে নির্বাক ছিলেন।
ওমন মুর্খদের ফেল করাতে দেয়নি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি উচ্চমানের ডিগ্রি দিয়ে অকার্যকর প্রাণীতে রূপান্তর করেছে কয়েক লাখ কলেজ-গ্র্যাজুয়েটকে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মতে, নতুন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী অনার্স-মাস্টার্স কলেজগুলোকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের সরকারি কলেজ শিক্ষকদের মধ্যে বিরূপ মনোভাবের প্রকাশ দেখছি। যদিও এতে অবাক হইনি, কেনোনা মুনাফালেহী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি ক্লাসে অযৌক্তিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করে সেসব বেদাত ভাগ-বাটোয়ারায় আমাদেরও যুক্ত করে আমাদের আত্মিক ও নৈতিক মনোবল বিপন্ন করেছে। তবু দিন শেষে পরিত্রাণ চাই, নয়তো শুদ্ধতার পথ তৈরি হবে কীভাবে?