ঢাকা শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ , ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

বেকারত্ব দূরীকরণে এভিয়েশনের ভূমিকা

মতামত

মো. সাইফুল্লার রাব্বী

প্রকাশিত: ০০:০০, ৫ মে ২০২৪

আপডেট: ১৩:২৩, ৬ মে ২০২৪

সর্বশেষ

বেকারত্ব দূরীকরণে এভিয়েশনের ভূমিকা

যে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা যতো উন্নত ও আধুনিক সে দেশে পর্যটকদের আগমন ততো বেশি এবং সে দেশের পর্যটন শিল্পও ততো বেশি গতিশীল। পর্যটনকে সঠিকভাবে উপস্থাপনার জন্য যতোগুলো সেক্টরের সমন্বয়ের প্রয়োজন তার মধ্যে পরিবহন ও যোগাযোগ, আবাসন, খাদ্য ও পানীয় এবং বিনোদন অন্যতম। বিশ্ব পর্যটন বিকাশে অসামান্য ভূমিকা রেখেছে বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থাগুলো। এয়ারলাইন্সের সফলভাবে বাণিজ্যিক উড্ডয়ন ভ্রমণ ব্যবস্থায় যোগ করেছে নতুন মাত্রা। বিশ্ব চলে এসেছে আমাদের হাতের মুঠোয়, যেখানে ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের সংখ্যা ছিলো মাত্র ২৫ মিলিয়ন যা বর্তমানে ১২০ কোটি ছাড়িয়েছে। 

ভ্রমণপিপাসু মানুষের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।এক দেশ থেকে অন্য দেশে যোগাযোগের সব থেকে সহজ মাধ্যম হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে আকাশ পথ। আকাশ প্থে ভ্রমণকারীরা ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন পুরো পৃথিবী। দিন দিন বাণিজ্যিকভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে্র সম্ভাবনা বাড়ছে। সেইসঙ্গে প্রয়োজন বাড়ছে দক্ষ জনশক্তির। সারা পৃথিবীতে ১২০টি দেশের ৩২০টি এয়ারলাইন্স নিয়ে গঠিত ব্যবসায়িক সংগঠন আন্তর্জাতিক এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েসন-এর মাধ্যমে এয়ারলাইন্স কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ডেস্টিনেশনে ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন  তথ্য মতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় দশ লাখ ফ্লাইট পরিচালিত হয় পৃথিবীর বিভিন্ন ডেস্টিনেশনে। বিশ্ব মানচিত্রে এয়ারলাইন্স পরিবহন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ লোভনীয় ডেস্টিনেশন হিসেবে এগিয়ে আছে অনেক দেশের তুলনায়। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৪৪টির বেশি এয়ারলাইন্স যাত্রী ও কার্গো  পরিবহন সেবা পরিচালনা করছে। এ ছাড়া ১০টির বেশি এয়ারলাইন্স কোম্পানি ফ্লাইট পরিচালনার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, কাতার এয়ারওয়েজ, সিংগাপুর এয়ারওয়েজ, সৌদি এয়ারলাইন্স, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স, এয়ার এরাবিয়া, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ,নভো এয়ারসহ আরো অনেক এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক ও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর থেকে দেশে বিদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করলেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আরো কয়েকটি বিমানবন্দর ফ্লাইট পরিচালনার উপযোগী করে তোলা হবে। গত বছরের শেষ নাগাদ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন নাম্বার টারমিনাল সীমিত পরিসরে চালু করা হয়েছে। 

অন্যতম জিডিএস কোম্পানি সেবার ট্রাভেল নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ লিমিটেড-এর কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার ও সিইও,মোহাম্মাদ সাইফুল হক জানান ‘আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সগুলোর ব্যবসা আরো দুই বা তিনগুন বাড়তে পারে। এখাতে দেশে ও বিদেশে জিডিএস জানা দক্ষ মানবসম্পদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য সেবার ট্রাভেল নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ লিমিটেড সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ, ইনস্টিটিউটগুলোতে হাতে-কলমে শিক্ষার জন্য সেবার গ্লোবাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের ট্রেনিং সফটওয়্যার প্রদান করেছে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা এয়ার টিকেট ,হোটেল বুকিং, টিকেট ইসু, রিইসু, ভয়েড, রিফান্ডসহ নানাবিধ বিষয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবে ৪০০টির বেশি এয়ারলাইন্স, ৪ লাখের বেশি ট্রাভেল এজেন্সি, ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন হোটেল, ৫০টির বেশি রেলওয়ে কোম্পানি, ২০টির বেশি ক্রসশিপ কম্পানি এবং ৪০টির বেশি কার রেন্টাল কোম্পানি সেবার সিস্টেমের মাধ্যমে সিট,রুমসহ অন্যন্য সেবা বিক্রির মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।

বাংলাদেশ সরকার বেসামরিক বিমান চলাচল খাতে গতি আনায়নে দক্ষ জনশক্তি প্রস্তুত করতে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে।ইতিমধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পেশাভিক্তিক বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই সব প্রশিক্ষণের আওতায় যেসব ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেছেন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হলে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী এভিয়েশনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়োগ লাভের সু্যোগ পাবেন। ট্যুরিজম মানেজম্যান্ট, এভিয়েশন মানেজম্যান্ট, রিজারভেশন অ্যান্ড টিকিটিং (জিডিএস), হসপিটালিটি মানেজম্যান্টসহ আরো বেশ  কিছু বিষয়ে প্রশিক্ষণে সহায়তা করছে।

আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশের বেকার সংখ্যা কমাতে এভিয়েশন শিল্প সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। দেশীয় এয়ারলাইন্স এর পাশাপাশি বিদেশি এয়ারলাইন্স, জিএসএ, পিএসএ, এয়ারপোর্ট, ওটিএ ট্রাভেল এজিন্সিগুলোতে কাজ করার সুযোগ পাবে বাংলাদেশের কয়েক লাখ দক্ষ তরুণ। এই খাতে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সরকার ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথরিটি ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর আওতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে রিজারভেশন অ্যান্ড টিকিটিং (জিডিএস) কোর্সটি পরিচালনা করছে যাতে করে প্রশিক্ষণের পর দক্ষ শিক্ষার্থীরা এয়ারলাইন্স, জিএসএ, পিএসএ, এয়ারপোর্ট, ওটিএ ট্রাভেল এজিন্সিগুলোতে কাজের সুযোগ পায়।

লেখক: অ্যাসিস্টেন্ট ম্যানেজার, কাস্টমার সাপোর্ট অ্যান্ড ট্রেনিং ডিপার্টমেন্ট, সেবার বাংলাদেশ

জনপ্রিয়