ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪ , ৬ কার্তিক ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

বিমানে উঠে বসা সেই শিশু এখন শিকলবন্দি

বিবিধ

আমাদের বার্তা, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:০০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সর্বশেষ

বিমানে উঠে বসা সেই শিশু এখন শিকলবন্দি

ভিসা, পাসপোর্ট ছাড়া বিমানে উঠে আলোচনায় আসা শিশু জুনায়েদ মোল্লা বাড়ি ফিরে বাঁধা পড়েছে শিকলে। এর আগেও কাউকে কিছু না বলে চলে যাওয়ায় ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হতো। চার দিন আগে দাদিকে মাদরাসা যাওয়ার কথা বলে বের হয়ে ঢাকায় গিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে উঠে পড়েন বিমানে। জুনায়েদকে এক নজর দেখতে বাড়িতে ভিড় করেছে এলাকাবাসী। 

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জুনায়েদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একটি রুমের মধ্যে খাটের উপর বসে রয়েছেন তিনি। পায়ে শিকল পরিয়ে ঘরের খুঁটির সঙ্গে শেকল তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর দেয়া হয় ভাত। ভাত খেয়ে জানালা দিয়ে উদাস দৃষ্টিতে বাইরে তাকিয়ে জুনায়েদ। 

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের পারইহাটি গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী ইমরান মোল্যার প্রথম পক্ষের ছেলে জুনায়েদ মোল্যা। মা অন্যত্র চলে যাওয়ার পর সৎ মায়ের কাছে বড় হতে থাকেন জুনায়েদ। ভর্তি করে দেয়া হয় উজানী হাফিজিয়া মাদরাসায়। এখন ওই মাদরাসার ৫ম শ্রেণিতে পড়েন। তবে বিভিন্ন সময় বাড়ির কাউকে না বলে বাইরে চলে যান তিনি। এবার ঘটিয়েছে অবাক করা কাণ্ড। 

শিশু জুনায়েদ জানায়, দাদি আসমা বেগমকে বলে তালাবদ্ধ ঘর থেকে বের হন তিনি। এরপর প্রথমে ইজিবাইকে করে মুকসুদপুর বাসস্ট্যান্ডে যায়। তারপর ঢাকার বাসে উঠে চলে যান সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে বাসে করে বসুন্ধরা, এরপর এয়ারপোর্ট যান। এয়ারপোর্টে ওপরে উঠতে গেলে বাধা পেয়ে অন্য পাশ দিয়ে ঘুরে সিঁড়ি দিয়ে উপরে ওঠেন জুনায়েদ। পরে অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে সোজা চলে যান কুয়েতগামী কুয়েত এয়ারওয়েজের রাত ৩টা ১০ মিনিটের ফ্লাইটে। প্রায় ১ ঘণ্টার মতো বিমানের সিটে বসে থাকার পর ধরা পড়ে পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই বিমানে উঠে বসেছে জুনায়েদ। 
পরে এয়ারপোর্ট থানা থেকে ফোন আসার পর জুনায়েদের খোঁজ পায় পরিবার। পরে জুনায়েদের চাচা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে এসে আবারো পালিয়ে যায় জুনায়েদ। পরে খুঁজে বের করে পায়ে শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। 

এ ঘটনা পর থেকে জুনায়েদকে দেখতে বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন এলাকাবাসী। জুনায়েদ সহজ-সরল হওয়ায় ও মানসিক সমস্যার জন্য বার বার এমন কাজ করছেন। তাকে ভালো চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরিবারকে পরামর্শ দেন তারা। 

জুনায়েদের চাচা ইউসুফ মোল্যা জানান, তার ভাতিজা জুনায়েদ খুব দুরন্তপনা। তাকে হাফেজিয়া মাদরাসায় ভর্তি করা হয়েছিলো। সেখান থেকে সে বার বার পালিয়ে আসে বলে তাকে বাড়ির পাশে আলিয়া মাদরাসায় ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে জুনায়েদ ৫ম শ্রেণিতে পড়ে। 

জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্যা বলেন, ১৮ মাস বয়সে অভাব-অনাটনের কারণে জুনায়েদের মা ওকে ফেলে গিয়ে অন্যত্র বিয়ে করে। পরে আমি আবার বিয়ে করি। জুনায়েদ ছাড়াও আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ওর সৎ মা অন্য ছেলেমেয়ের মতো করেই ওকে ভালোবাসে। কিন্তু ছেলেটি সুযোগ পেলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর মনে হচ্ছে, ওর মানসিক সমস্যা হয়েছে। শীঘ্র ওকে চিকিৎসকের কাছে নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। 

এক প্রশ্নের উত্তরে ইমরান মোল্যা বলেন, চিকিৎসা শেষে ওর পায়ের শিকল খুলে দেয়া হবে। আর তাকে তালাবদ্ধ অবস্থায় রাখা হবে না। পালিয়ে গেলে ঝামেলায় পড়তে হয়, তাই এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। 

জনপ্রিয়