ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪ , ৩০ বৈশাখ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

গুনে গুনে ঘুষের টাকা

বিবিধ

আমাদের বার্তা, কক্সবাজার 

প্রকাশিত: ০১:৫০, ২৯ এপ্রিল ২০২৪

সর্বশেষ

গুনে গুনে ঘুষের টাকা

গুনে গুনে টাকা নিলেন তিনি। গোনা শেষ হলে টাকার পরিমাণ নিয়ে নিজের অসন্তোষের কথা জানালেন। বললেন, ‘এ টাকা নিলে আমাকে বকা দেবে।’ এরপর মুঠোফোনে এ নিয়ে কারও সঙ্গে আলাপ করেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘স্যার, রফিক মেম্বারের ৮০ হাজার দেওয়ার কথা ছিল, ৪০ হাজার দিয়েছে। স্যার, এক মাস পর আবার বিল আছে, তখন কেটে রাখতে হবে।’

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী মমতাজ বেগমের টাকা নেওয়ার এমন একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যার পরে ভিডিয়োটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, মমতাজ বেগম তাঁর অফিসের একটি কক্ষে গুনে গুনে টাকা নিচ্ছেন।

তবে গতকাল রোববার মমতাজ বেগম বলেন, আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। ভিডিয়োটি এডিট করে প্রচার করা হয়েছে।
মমতাজ দাবি করেন, ভিডিয়োতে আমি টাকা নিচ্ছি, এমন দেখা যাচ্ছে না। তবে গুনছি, সেটা দেখা যাচ্ছে। আমার স্বামী বিদেশ থাকে। তিনি বিকাশে টাকা পাঠিয়েছেন, সেই টাকা গুনতেছিলাম।

যদিও এলাকার একটি এতিমখানার বরাদ্দ করা অনুদানের টাকা তুলতে গিয়ে সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী মমতাজ বেগমকে টাকা দিতে হয়েছে বলে জানান ওই এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম। ভিডিয়োটি ৮ এপ্রিল ধারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী মমতাজ বেগমের ডেস্কের সামনে হারবাং ইউনিয়নের মধ্যম পহরচাঁদা এতিমখানার সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও আরেকজন লোক বসে আছেন। এমন সময় আরেকজন মধ্যবয়স্ক নারী তাঁর কক্ষে ঢোকেন। একপর্যায়ে মমতাজ বেগম তাঁর চেয়ার থেকে উঠে ইশারায় রফিকুল ইসলামকে পাশের কক্ষে ডেকে নেন। সেখানে দুজনের মধ্যে কথা হয়। এ সময় মমতাজ বেগমকে রফিকুল তাঁর পকেট থেকে বের করে এক হাজার টাকার নোটের একটি বান্ডিল দেন। তখন মমতাজ বেগম জানতে চান, এখানে কত দিয়েছেন? তখন ওই ব্যক্তি গুনে নিতে বললে, মমতাজ টাকাগুলো গুনতে থাকেন।

ওই সময় রফিকুল বলেন, আমি টাকা তুলতে পারিনি। অনেক কষ্ট করে টাকা এনেছি। প্রথম কিস্তির বরাদ্দ বাবদ ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা তুলতে পারিনি।

তখন মমতাজ বেগম রফিকুলকে বলেন, আপনি ঠকে যাবেন। আপনার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। রফিকুল অনুরোধ করে বলেন, আমি বেঁচে থাকলে টাকা পাবেন।

টাকা গোনা শেষে মমতাজ বেগম কেউ একজনকে ফোন করে বলেন, স্যার, রফিক মেম্বার ৮০ হাজার দেওয়ার কথা ছিল, ৪০ হাজার দিয়েছে। স্যার, এক মাস পর আবার বিল আছে, তখন কেটে রাখতে হবে।

রফিকুল চকরিয়া উপজেলার বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্যও। তিনি বলেন, এতিমখানার বরাদ্দের টাকা তুলতে গিয়ে অফিস সহকারী মমতাজ বেগমের সঙ্গে আমার কয়েক দফা বৈঠক হয়। ২০২৩-২৪ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম কিস্তির ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করা হয়। অন্যথায় এতিমখানার টাকা ফেরত পাঠিয়ে দেবে। পরে ৮ এপ্রিল সমাজসেবা অফিসে গিয়ে দুপুর ১২টার দিকে অফিস সহকারী মমতাজ বেগমকে ৪০ হাজার দিই।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চকরিয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেনের মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জনপ্রিয়