শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের অডিট ও তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে তৎকালীন উপাধ্যক্ষ এ বি এম বেলাল হোসেন ভূঞার আর্থিক ও নিয়োগসহ নানাবিধ অনিয়ম। শুধু তিনিই নন রাজধানীর শুক্রাবাদের এ কলেজটির মোট ৪৪ জনের বিরুদ্ধে আর্থিকসহ নানা অনিয়ম প্রমাণিত হয়েছে। সেটাও গত বছরের জুলাইয়ের ঘটনা। ডিআইএর প্রতিবেদনের বরাতে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সেই প্রতিবেদন প্রকাশের পর তিনি প্রতিবাদ প্রকাশের জন্য ব্যর্থ তদবিরও করেন। কলেজ পরিচালনা পর্ষদে থাকা রাজনৈতিক ব্যক্তিদের দিয়ে মন্ত্রণালয় ও পরিদর্শন নিরীক্ষা অধিদপ্তরে তদবিরও করান। মন্ত্রণালয় থেকে ব্রডশিট জবাব চাওয়া হয় বেলালের কাছে। সেই চিঠি গায়েব করে দেন বেলাল ভূঞা। বনে যান কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তিনিই গত ২১ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা শাখার উপ-সচিব বরাবর চিঠি লেখেন। চিঠিতে দাবি করেন, তিনি পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের গত বছরের জুলাই মাসের তদন্ত প্রতিবেদনের কপি পাননি! আর তাই তিনি ব্রডশিট জবাব দিতে পারেননি।
এদিকে ডিআইএ তদন্ত প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় অবৈধভাবে দেয়া নিয়োগ বাতিল ও সরকারের কোষাগারে টাকা ফেরত নেয়ার সুপারিশ করা হয়।
ডিআইএ পরিদর্শক এনামুল হকের নেতৃত্বে একটি কমিটির ওই তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান উপাধ্যক্ষ এ বি এম বেলাল হোসেন ভূঁঞা অবৈধ পদবি ব্যবহার করে অতিরিক্ত চার কোটি পাঁচ লাখ ৭০ হাজার ৯৫৭ টাকা উত্তোলন করেছেন। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী অধ্যাপক থাকাকালে তিনি অবৈধভাবে উপাধ্যক্ষ-২ পদে যোগদান করেন। অথচ জনবল কাঠামো অনুযায়ী, এক শিফটের ডিগ্রি কলেজে একজন উপাধ্যক্ষের পদ রয়েছে।
এ ছাড়া একজন শিক্ষক একাধিক আর্থিক লাভজনক পদে থাকতে পারবেন না। কিন্তু বেলাল হোসেন উপাধ্যক্ষ-২ পদে যোগদানের পর সহকারী অধ্যাপকের পদ থেকে তার অব্যাহতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উপাধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত হয়েছেন। ২০১০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত অবৈধভাবে উপাধ্যক্ষ-২ পদের বিপরীতে তিনি এমপিওসহ বেতন-ভাতার তিন কোটি ৮৮ লাখ ৩৩ হাজার ৮২ টাকা বিধিবহির্ভূতভাবে তুলেছেন। বাসাভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বাবদ প্রাপ্য অর্থের চেয়ে অতিরিক্ত ১৭ লাখ ৩৭ হাজার ৮৭৫ টাকা তুলে নিয়েছেন।