
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ডা. মোহাম্মদ ফজলে রাব্বীর জন্মদিন কাল। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পাবনা জেলার ছাতিয়ানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আফসার উদ্দিন আহমেদ। মা সুফিয়া খাতুন।
পাবনা জিলা স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিক, ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে থেকে ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে এমবিবিএস পাস করেন। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মেধাবী ছাত্র হিসেবে তিনি এমবিবিএস চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্বর্ণপদক’ লাভ করেন।
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে ডা. রাব্বী যুক্তরাজ্যের এডিনবরা থেকে এমআরসিপি ডিগ্রি লাভ করেন। তিন বছর পর দেশে ফিরে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি একই সঙ্গে মেডিসিন ও হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক হন।
‘ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’ ও ‘ল্যান্সেট’ সাময়িকীতে তার প্রচুর গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময়ই তিনি ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
মানুষের অধিকারের প্রশ্নে সোচ্চার ডা. রাব্বী ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। যত দিন জীবিত ছিলেন তত দিন বাঙালির স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিটি আন্দোলনেই অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই তিনি অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। তার বাসায় মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই আসতেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র এক দিন আগে ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে পাকিস্তানি বাহিনীর কয়েকজন সেনাসহ রাজাকার-আলবদররা ডা. ফজলে রাব্বীকে তার সিদ্ধেশ্বরীর বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে। ১৮ ডিসেম্বর রায়েরবাজার বধ্যভূমি থেকে শহীদ ডা. ফজলে রাব্বীর ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।