
দেশবরেণ্য কন্ঠশিল্পী আঞ্জুমান আরা বেগমের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
আঞ্জুমান আরা বেগম ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জানুয়ারি, বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শহীদ ডাঃ মোহাম্মদ কসিরউদ্দিন তালুকদার, বগুড়া লোকাল বোর্ড এবং ডিষ্ট্রিক বোর্ডের চেয়ারম্যান ও চিকিৎসক ছিলেন, তার মাতা মোসামৎ সৈয়দা জিয়াউন নাহার বেগম, বগুড়ার জেল ভিজিটর, মিউনিসিপ্যাল কমিশনার, গার্লস গাইড কমিশনার, নারী পুনর্বাসন সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন)।
আঞ্জুমান আরা বেগম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ বিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তারা ছিলেন ৫ বোন এবং ২ ভাই। তার বড় বোন জেব-উন-নেসা জামাল একজন খ্যাতিমান গীতিকার ছিলেন এবং আরেক বোন মাহবুব আরা বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পী ছিলেন। সঙ্গীতশিল্পী জিনাত রেহানা তার ভাগ্নি এবং উপমহাদেশের প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী রুনা লায়লা তার চাচাতো বোন।
আঞ্জুমান আরা বেগম পঞ্চাশের দশক থেকেই রেডিওতে গান গেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তিনি সর্বপ্রথম ‘হারানো দিন’ ছবিতে মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নেপথ্য কন্ঠ শিল্পী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। মুস্তাফিজ পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে।
আঞ্জুমান আরা বেগমের গাওয়া জনপ্রিয় কালজয়ী কিছু গানের মধ্যে আছে- আকাশের হাতে আছে এক রাশ নীল…., এমন মজা হয়না গায়ে সোনার গয়না….., তুমি আসবে বলে কাছে ডাকবে বলে ভাল, বাসবে ওগো শুধু মোরে ইত্যাদি।
আঞ্জুমান আরা বেগম ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে টেলিভিশন সম্প্রচারের শুরু থেকেই গান গাওয়া শুরু করেন এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। মূলত ষাটের দশকে থেকেই তিনি সংগীত শিল্পী হিসেবে প্রবল জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তখন রেডিও, টেলিভিশন বা গ্রামোফোন রেকর্ডে তার সুমধুর কণ্ঠের গাওয়া গান শ্রোতাদের বিমোহিত করতো।
আঞ্জুমান আরা বেগম তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’ তাকে গুণীজন সম্মাননা প্রদান করে। ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন কর্তৃক নানা পুরস্কার ও সম্মাননা পান।
তিনি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন ।