স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থী, কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ এবং স্থানীয়দের যাতায়াতের সুবিধার্থে নিজস্ব অর্থায়নে নদীর উপর কাঠের ব্রিজ নির্মাণ করেন এলাকাবাসী। আর সেই ব্রিজ থেকে অবৈধভাবে চাঁদা তোলার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। বুধবার সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গেলে নাম না প্রকাশের শর্তে বেশ কয়েকজন বয়স্ক নারী ও পুরুষ বলেন, এই ব্রিজকে কেন্দ্র করে এর মধ্যেই মারামারি ও মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে। ভবিয্যতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এদিকে গত সোমবার নেত্রকোণা কলমাকান্দার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবরে লেঙ্গুরা ইউপি (ইউনিয়ন) চেয়ারম্যানের সুপারিশ নিয়ে এ বিষয়ে শিবপুর গ্রামের এলাকাবাসীর পক্ষে মকগুল ইসলামের ছেলে আমির হোসেন, ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যসহ আরো অনেকের স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, রাধানগর, জিগাতলা, মানিকপুর গ্রাম থেকে স্কুল ও মাদরাসার শিক্ষার্থী, অসহায় রোগীদের কমিউনিটি ক্লিনিকের চিকিৎসা সেবা গ্রহণ ও স্থানীয়দের যাতায়াতের সুবিধার্থে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের আর্থিক সহায়তায় রাধানগর থেকে শিবপুরগামী রাস্তা বরাবর কাউবাড়ি নদীর উপর বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই একদল চাঁদাবাজ অবৈধভাবে চাঁদা উত্তোলন শুরু করে।
এতে বাঁধা দিলে শিবপুর গ্রামের মো. হযরত আলীর হুকুমে আতাব উদ্দিন, মো. ইউনুছ আলী, মো. শরীফুল, মো. রইছ উদ্দিন, মো. আরিফুল, মো. রতন মিয়া, মো. আবু রায়হান, মো. নাছির উদ্দিন, ইয়ামিনসহ আরো অনেক ব্যক্তি লাঠিসোটা ও দাঁড়ালো অস্ত্র দিয়ে একজনকে রক্তাক্ত জখম করেন। পরবর্তীতে আহত ব্যক্তিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তােকে ময়মনসিংহ মেডি্যোল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে ব্রিজটি উন্মুক্ত এবং কেউ চাঁদা তুলতে পারবে না বলে জানানো হয়। কিন্তু এরপরেও ব্রিজের উপর দিয়ে যাতায়াতকারীদের কাছ থেকে ফের টাকা নেয়া শুরু হয়।
চাঁদাবাজরা বলে, টাকা উত্তোলন করতে না পারলে ব্রিজটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে এবং যারা বাঁধা দিবে তাদেরকে হত্যার হুমকি দেয়। এমতাবস্থায় হত্যাসহ বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধার্থে ব্রিজটি উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানান অভিযোগকারীরা।
এ বিষয়ে লেঙ্গুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া জানান, এলাকার ১০ জনের অর্থের বিনিময়ে স্থানীয়ভাবে ব্রিজটি নির্মিত হয়। এ ব্রিজ দিয়ে যাতায়াতে দু’পাড়ের জনগণকে চাঁদা দিতে হয়। ব্রিজটি উন্মুক্ত রাখার জন্য এলাকাবাসী ইউএনওকে লিখিতভাবে জানিয়েছে।
কলামাকান্দা ইউএনও মো. আসাদুজ্জামান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি পাবার সাথে সাথেই জনস্বার্থে ঘটনাস্থলে থানার ডিউটি অফিসারকে পাঠানো হয়েছে।