
বাংলাদেশ পৃথিবীর যেসব দেশে সর্বনিম্ন কর-জিডিপি অনুপাত বিদ্যমান সেই তালিকার প্রথম দিকে রয়েছে। বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা বহুলাংশে পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে ভ্যাট ও সম্পূরক করের মতো বিষয়ের ওপর রাজস্ব আহরণ বহুলাংশে নির্ভর করে। যে কর ব্যবস্থা কোনোভাবেই প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা নয়।
রাজধানীর একটি হোটেলে গত বুধবার বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সংগঠন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে সম্পত্তি করের পরিস্থিতি ও সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ কথা বলেন। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। প্যানেল আলোচক ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ ও ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ, হিসাববিদ স্নেহাশীষ বড়ুয়া এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তারাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত রাষ্ট্রে সম্পত্তি করের পরিমাণ গড়ে ১০ শতাংশের ওপর। সেখানে বাংলাদেশে এর পরিমাণ মাত্র শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ। ওইসিডিভুক্ত দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ কর আহরণের পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ভুক্ত হবে। তখন নিজস্ব সম্পদ আহরণ বাড়াতে হবে। তাছাড়া দেশের মোট জিডিপির বিপরীতে প্রতিবছর দশমিক ৫ শতাংশ হারে রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর বিষয়ে আইএমএফের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে এখন কর আহরণের আওতায় বাড়াতে হবে।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সম্পদ করের ক্ষেত্রে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। জমি ও বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে যথাযথভাবে কর আরোপ হচ্ছে না। এখানে বৈষম্য রয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনায় অনেক সমস্যা রয়েছে। রাতারাতি এ সমস্যা করা সম্ভব নয়। আমাদের জিডিপির তুলনায় ট্যাক্স আহরণ কম সেটা সত্য। কর আহরণ বাড়াতে সরকার ভূমির খাজনা আদায়ে ডিজিটাইজেশন পদ্ধতি চালু করছে।