
আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। শনিবার (১৮ মার্চ) নিজের ফেসবুক পেজে তিনি লিখেছেন, ‘আমি আপনাদের সবাইকে আশ্বস্ত ও সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে চাই যে, ‘আরাফ ওরফে রবিউল ওরফে হৃদয়’ নামে আমি কাউকে চিনি না। আমার সাথে তার এমনকি প্রাথমিক পরিচয়ও নাই। আমি আমার ল এনফোর্সমেন্ট ক্যারিয়ার এর পুরোটা সময় খুনি, সন্ত্রাসী, ড্রাগ ব্যবসায়ী, চোরকারবারি, ভেজালকারি ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি কখনো সখ্যতা নয়। আপনাদের অফুরান ভালোবাসা, সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা।’
বস্তুত হৃদয়ের সঙ্গে পরোক্ষভাবে তার নাম জড়িয়ে খবর প্রকাশিত হতে থাকায় সাবেক আইজিপি এই স্ট্যাটাস দেন।
প্রসঙ্গত, চার বছর আগের কপর্দকশূন্য হৃদয়ের অল্প সময়ে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে এখন সারাদেশেই চলছে তুমুল আলোচনা।
সম্প্রতি দুবাইয়ে আলোচিত আরাভের হাজার কোটি টাকার স্বর্ণের দোকান উদ্বোধন করে এসেছেন ক্রিকেটের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং টিকটক ও সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত হিরো আলমসহ বিভিন্ন তারকা।
তারপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে থাকে তার হাজার কোটি টাকার স্বর্ণের দোকান, দুবাইয়ে অন্যান্য সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে। আর তার মাথার ওপরে পুলিশের সাবেক এক শীর্ষ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়।
বলা হচ্ছে, আরাভ খান ওই কর্মকর্তার আত্মীয়। তিনিই আরাভকে নানাভাবে সহায়তা করে ভারতে পালাতে সহায়তা করেন। এরপর দুবাইয়ে আরাভের মাধ্যমে ওই কর্মকর্তা হাজার কোটি টাকা জুয়েলারি ও আবাসন ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন।
যদিও গত বৃহস্পতিবার ফেসবুক লাইভে এসে আরাভ খান বলেন, ‘বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে হেল্প করে ফ্লাইট করে দিয়েছেন-এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমার সবার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল।’
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষে বলা হচ্ছে, পুলিশের পরিদর্শক মামুন হত্যা মামলার আসামি আরাভ। ওই হত্যা মামলায় তিনি পালিয়ে গেলেও অন্য একজনকে রবিউল বলে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। সে নিজেও তাকে রবিউল ইসলাম বলেই পরিচয় দেয়। তবে পরে বিচারিক প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে আসে সে পুলিশ হত্যার আসামি রবিউল ইসলাম নয়। পরে ডিবির তদন্তে নকল আসামির ঘটনা সামনে আসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য, আরাভ ভারতে পালিয়ে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার উদয় সংঘ ক্লাবের পাশে দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। খুনের মামলায় আসামি হওয়ার পর পালিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে ওঠেন কর্তাবাদ এলাকার নরেন্দ্রপুর বস্তিতে। সেই এলাকার বস্তির জনৈক জাকির হোসেনের বাড়িতে অবস্থান ছিল তার। জাকির ও তার স্ত্রী রেহানা বিবির সঙ্গে সখ্য গড়ে তাদের বাবা-মা বানিয়ে আরাভ তার নিজের ও স্ত্রীর ভারতীয় পাসপোর্ট বানান ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে। তারপর ভারতীয় পাসপোর্টে দুবাই যান। আরব আমিরাত সরকার ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ অক্টোবর তাকে রেসিডেন্ট পারমিট দেয়। আগামী বছরের ৩০ অক্টোবর এই পারমিটের মেয়াদ শেষ হবে।