ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে ২০২৫ , ২৫ বৈশাখ ১৪৩২ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০০, ১ জুন ২০২৪

সর্বশেষ

তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বিশিষ্ট সাংবাদিক, রাজনীতিক, দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন এর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। মানিক মিয়া নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। তিনি ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিরোজপুর হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা এবং বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএ পাস করেন। পিরোজপুর মহকুমা হাকিমের আদালতে সহকারী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু। পরবর্তী সময়ে তিনি বরিশালে জেলা জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে নিয়োগ লাভ করেন।

বরিশালে কর্মরত থাকাকালে মানিক মিয়া হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আনুকূল্য লাভ করেন এবং তার পরামর্শে চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে কলকাতা যান। সেখানে তিনি প্রাদেশিক  মুসলিম লীগ কার্যালয়ে সেক্রেটারি নিযুক্ত হন। এসময় থেকেই তিনি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এ চাকরি ছেড়ে সোহরাওয়ার্দী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার পরিচালনা বোর্ডের সেক্রেটারি পদে যোগ দেন। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেলে তিনি কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় চলে আসেন। অতঃপর ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন এবং ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে এ পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক ইত্তেফাক দৈনিক ইত্তেফাকে রূপান্তরিত হয়।

আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে তফাজ্জল হোসেন ও তার সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক ইত্তেফাক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সামরিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কারারুদ্ধ হন এবং এক বছর কারাভোগ করেন। সামরিক শাসন বিরোধী ছাত্র বিক্ষোভে ইন্ধন যোগাবার অভিযোগে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে পুনরায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। ছয়দফা আন্দোলনের প্রতি তিনি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং ছয়দফার মুখপত্র হিসেবে ইত্তেফাক এ আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ জুন তিনি পুনরায় গ্রেফতার হন। দৈনিক ইত্তেফাকের প্রকাশনা নিষিদ্ধ ও নিউ নেশন প্রিন্টিং প্রেস বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর ফলে তার প্রতিষ্ঠিত অপর দুটি পত্রিকা ঢাকা টাইমস ও পূর্বাণী বন্ধ হয়ে যায়। গণআন্দোলনের মুখে ইত্তেফাকের প্রকাশনার ওপর বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হলে ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি পত্রিকাটি পুনঃপ্রকাশিত হয়।

মানিক মিয়া ছিলেন বস্ত্তনিষ্ঠ ও নির্ভীক সাংবাদিক। সংসদীয় গণতন্ত্র ও পূর্ব বাংলার আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি ইত্তেফাকের ‘রাজনৈতিক হালচাল’ ও পরবর্তী সময়ে ‘মঞ্চে নেপথ্যে’ উপসম্পাদকীয় কলামে ‘মোসাফির’ ছদ্মনামে নিয়মিত রাজনৈতিক নিবন্ধ লিখতে শুরু করেন।

ষাটের দশকে বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে মানিক মিয়া ছিলেন অন্যতম পৃষ্ঠপোষক। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী পালনের বিরোধিতা করলে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য হিসেবে শতবার্ষিকী পালনে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক শোষণহীন সমাজব্যবস্থায় বিশ্বাসী।

তফাজ্জল হোসেন ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে চীনে অনুষ্ঠিত এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় শান্তি সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক প্রেস ইনস্টিটিউটের পাকিস্তান শাখার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সরকারি উদ্যোগে গঠিত পাকিস্তান প্রেস কোর্ট অব অনার-এর সেক্রেটারি এবং পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারওয়েজ-এর পরিচালক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ পাকিস্তানী রাজনীতির বিশ বছর এবং নির্বাচিত ভাষণ ও নিবন্ধ। তারই স্মৃতিতে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে মানিক মিয়া এভিনিউর নামকরণ করা হয়। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে মৃত্যুবরণ করেন। 

জনপ্রিয়