জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হলেও তা মানবে না ইসরাইল। এ প্রস্তাবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গাজায় হামলা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরাইল কাটজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স প্লাফটর্মে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসরাইল যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানবে না। আমরা হামাসকে ধ্বংস করতে চাই। এছাড়া আমরা আমাদের জিম্মিদের ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত সেখানে হামলা চালিয়ে যাব।
এদিকে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাসের পরই ইসরায়েল হোয়াইট হাউজে এ সপ্তাহে তাদের প্রতিনিধিদলের নির্ধারিত সফর বাতিল করেছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সোমবারের আনা প্রস্তাবনায় যুক্তরাষ্ট্র ভেটো না দিয়ে ভোটদানে বিরত ছিলো। আর তাতেই চটেছে ইসরায়েল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রস্তাবনা পাসের পরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছেন, তারা আগের অবস্থান থেকে স্পষ্টতই পিছু হটে গেছে।
এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘে তাদের নীতি থেকে সরে গেছে। দুঃখজনকভাবে তারা নতুন প্রস্তাবনাতে ভেটো দেয়নি। যে প্রস্তাবনায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জিম্মি মুক্তির শর্তসাপেক্ষে নয়। এতেই স্পষ্ট হয় যে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর সময় থেকে নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের যে অবস্থান ছিলো তা থেকে তারা সরে গেছে।
এর আগে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। এর আগে এরকম প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দিলেও এবার ভোট দান থেকে বিরত থেকেছে।
নিরাপত্তা পরিষদের এই প্রস্তাবে সব জিম্মিদের অবিলম্বে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
গত বছরের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর বেশ কয়েকটি ব্যর্থ প্রচেষ্টার পরে নিরাপত্তা পরিষদ এই প্রথম যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়।
গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণের প্রেক্ষাপটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ তার এবং তার মিত্র ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মতবিরোধের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, গাজায় এখনও যেহেতু জিম্মিরা আটকে রয়েছে, তাই ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করবে না।
জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি, রিয়াদ মনসুর প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে, বলেছেন,এটা আরও অনেক আগেই করা দরকার ছিল।
মি. মনসুর বলেছেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাতে এই কাউন্সিলের ছয় মাস সময় লেগেছে। এরই মধ্যে দশ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত ও পঙ্গু হয়েছে, দুই মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত এবং দুর্ভিক্ষ হয়েছে।