
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। ছবি : সংগৃহীত
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ২৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত তুরস্ক, ইরান, আজারবাইজান ও তাজিকিস্তান সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে আঞ্চলিক পরিস্থিতি, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিস্তৃত আলোচনা করা।
শুক্রবার (২৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে দ্য ডন।
পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (এফও) এক বিবৃতিতে শুক্রবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সফরকালে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন এবং সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে সংঘাতের সময় যেসব মিত্র দেশ পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবেন।
এই সফর এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। এর আগে সংঘাতের সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উভয় দেশ সফর করে শান্তির বার্তা দেন এবং মধ্যস্থতার চেষ্টা চালান।
আঞ্চলিক শান্তি ও জলবায়ু ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের অংশগ্রহণ
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ২৯ ও ৩০ মে তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে অনুষ্ঠেয় আন্তর্জাতিক হিমবাহ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতে হিমবাহ গলনের প্রভাব এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ায় পানি নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলন হিসেবে বিবেচিত।
ভারতের ‘মিথ্যা প্রচারণা’ মোকাবেলায় কূটনৈতিক তৎপরতা শুরু
সফরের পাশাপাশি, পাকিস্তান সরকার ভারতের বিরুদ্ধে একটি আক্রমণাত্মক কূটনৈতিক প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের নির্দেশে একটি উচ্চপর্যায়ের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল লন্ডন, ওয়াশিংটন, প্যারিস এবং ব্রাসেলস সফর করবে, যেখানে তারা ভারতের তথাকথিত ভুয়া প্রচারণা এবং দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা বিনষ্টের চেষ্টার বিষয়টি তুলে ধরবে।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। দলে আরও রয়েছেন: ড. মুসাদিক মালিক ইঞ্জিনিয়ার খুররম দস্তগীর, সিনেটর শেরি রেহমান হিনা রব্বানি খার, ফয়সাল সুবজওয়ারি, তাহমিনা জানজুয়া, জালিল আব্বাস জিলানি
তুরস্ক ও আজারবাইজানের প্রতি কৃতজ্ঞতা
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তুরস্ক ও আজারবাইজানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় এই দুটি দেশের অবিচল সমর্থন পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় এসব মিত্র দেশ ভবিষ্যতেও কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই সফর এবং কূটনৈতিক তৎপরতা পাকিস্তানের একটি সুপরিকল্পিত কৌশলগত পদক্ষেপ, যার মাধ্যমে দেশটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের বিরুদ্ধে সমর্থন আদায় করতে এবং নিজ অবস্থানকে জোরালোভাবে তুলে ধরতে চাচ্ছে।