
গ্রীষ্মের এই তীব্র গরমে নাজেহাল জনজীবন। বাসা-বাড়িতে বসে বসেও শরীর থেকে ঘাম ঝরতে থাকে। শরীর ও মন ঠান্ডা রাখার জন্য খাদ্যতালিকায় মনোযোগ দেয়া হয়।
পাশাপাশি কিছুক্ষণ পর পরই গোসল করার অভ্যাস আমাদের। বারবার গোসল করার ফলে অবশ্য ভালো লাগে।
গরমের সময় বারবার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার প্রচলন সেই প্রাচীন সময় থেকে। কিন্তু গরমে এমনটা কি ঠিক? সম্প্রতি এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন বিএলকে ম্যাক্স হাসপাতালের সহযোগী পরিচালক-নিউরোলজিস্ট ডা. বিনীত বঙ্হ।
তিনি জানিয়েছেন, গরমের সময় অল্প সময়ের মধ্যে গোসল শেষ করা উচিত। কেননা, তাপপ্রবাহের সময় পানি তাড়াতাড়ি গরম হয়। এ সময় পানিতে দীর্ঘ সময় থাকলে ডিহাইড্রেশন বাড়ে।
এ ডাক্তার জানিয়েছেন, ডিহাইড্রেশন ক্লান্তি ও হিট স্ট্রোকসহ গুরুতর জটিল পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। আবার কম পানিতে গোসল করলে পানি সংরক্ষণ করাও সম্ভব হয়।
পাশাপাশি ত্বকের জ্বালা আটকানো সহজ হয়। কেননা, গরম পানি ত্বকের প্রাকৃতিক তেলের ভাণ্ডার ভেদ করতে পারে। এ কারণে ত্বক শুকনো হয়। ত্বকে ফুসকুড়ির মতো সংবেদনশীলতা বাড়তে থাকে।
চিকিৎসকের পরামর্শ: নয়া দিল্লির আকাশ হেলথকেয়ারের কনসালটেন্ট কার্ডিওলজিস্ট ডা. সুকৃতি ভাল্লা বলেছেন, আমরা গোসলের সময় শরীরের ছিদ্রগুলোকে ভালোডিলেট করি বা খুলে ফেলি। যেমন, আপনি যত বেশি পানিতে গোসল করবেন, শরীরের তাপ তত কমবে। এই তীব্র গরমের সময় যতটা সম্ভব শরীরে সংরক্ষণ করাই লক্ষ্য।
এছাড়া ডিহাইড্রেশনের কারণে রক্ত ঘন হয় ও জমাট বাঁধে। এ থেকে পালমোনারি এমবোলিজম হয়। হার্ট অ্যাটাকের থেকেও খারাপ।
এ জন্য ডিহাইড্রেশন দূর করার জন্য বাইরে থেকে ঘুরে এসে লবণ-পানি পান করার কথা বলা হয়। ডা. সৃকুতি বলেছেন, শরীরের তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকা দরকার। ভাসোডিলেশন ও ডিহাইড্রেশনের কারণে শক্তি ও তারল্য, উভয়ই হারায় শরীর।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন: ঘরের তাপমাত্রার পানিতে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মতো গোসল করতে পারেন। সূর্যের তাপ যখন তীব্র, তখন গোসল না করাই ভালো। কেননা, শরীরের তাপমাত্রা এ কারণে অনিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রিত রাখার জন্য বেলা ১১টার বা সন্ধ্যার দিকে গোসল করার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।