
চিকিৎসাবিজ্ঞানের জগৎ মানুষের কাছে খুবই আশ্চর্যজনক একটি বিষয়। এটি আরও বেশি আশ্চর্যজনক লাগে যখন মানুষের রক্তের প্রয়োজন হয়। সবার রক্তের রং একই (লাল) হলেও যখন কারো শরীরে কোনো কারণে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয় তখন একই গ্রুপের রক্ত দিতে হয়।
কিন্তু অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে কেন একই গ্রুপের রক্ত দেয়া হয়। কেন এমন হয় না যে অন্য গ্রুপের রক্ত তাদের শরীরে দেয়া হলে? এটি খুবই আশ্চর্যজনক একটি বিষয়। আজকের প্রতিবেদনের মাধ্যমে আপনাদের এ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব।
শরীরে যখন কোনো রক্তের অভাব হয় কিংবা কোনো কারণে শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বেরিয়ে যায় তখন ডাক্তাররা রক্ত সঞ্চালনের বা শরীরে রক্ত দেয়ার পরামর্শ দেন।
কখনও বা অন্য কোনো শারীরিক কারণেও রক্ত শরীরে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন হয়। তবে সেক্ষেত্রে শুধু নিজের ব্লাড গ্রুপের রক্তই একজনের শরীরে ট্রান্সফার করা যায়। অন্য কোনো ব্লাড গ্রুপের রক্ত অন্যের শরীরে ট্রান্সফার করা যায় না।
এটি নানা কারণে হয়ে থাকে। চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে , অন্য গ্রুপের রক্ত শরীরে ট্রান্সফার করলে তা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এর ফলে তাৎক্ষণিকভাবে শরীরে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। অন্য গ্রুপের রক্ত শরীরে প্রবেশের ফলে ঐ রক্তে থাকা বিভিন্ন ধরণের অ্যান্টিজেন শরীরে প্রবেশ করে। এগুলো রক্তে আসার ফলে তা একত্রিত হয়ে রক্তণালীগুলোকে ব্লকও করে দেয়।
এর ফলে যখন রক্তণালীগুলো ব্লক হয়ে যায় তখন রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে। এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তবে সঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালনের পরও অনেক সময় শরীরে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। তবে এটি অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের মাধ্যমে ঠিক করা যায়।
অন্য গ্রুপের রক্ত শরীরে প্রবেশের ফলে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে শুরু করে। ফলে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে গাঢ় বাদামি রঙের তরল নির্গত হতে শুরু করে। হিমোগ্লোবিন বিলুরুবিন নামক এক প্রকার পদার্থে পরিণত হয়ে জন্ডিসের মতো রোগ হওয়ার হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। রক্ত জমাট বেঁধে মৃত্যু হাওয়ার আশঙ্কাও থাকে।