চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে ছাপিয়ে নকল সরবরাহের দায়ে ছায়েদুল ইসলাম (৫৩) নামে এক মাদরাসা অধ্যক্ষকে দুই বছর কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এইসঙ্গে তাকে এক হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। গতকাল রোববার শাহরাস্তি পৌর এলাকার চিশতিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসাকেন্দ্রে দাখিল ইংরেজি প্রথমপত্র পরীক্ষা চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, বেলা ১১টায় সরকারি গাড়ি দূরে রেখে ইউএনও হেঁটে কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। এ সময় কেন্দ্রের ভেতরে অবস্থানরত অফিস সহকারী, আয়া ও কিছু শিক্ষক ছোটাছুটি শুরু করেন। শিক্ষকদের ইঙ্গিতে পরীক্ষার্থীরা নকল জানালা দিয়ে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ফেলে দেন। ইউএনও কেন্দ্রে অনিয়ম বা নকলের বিষয়টি আন্দাজ করতে পেরে শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করেন।
পরে শ্রেণিকক্ষের বাইরে ও পরীক্ষা কেন্দ্রের সীমানার মধ্যে অসংখ্য হাতে লেখা সমাধান পাওয়া যায়। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রিন্টারে ২৫-৩০ কপি হাতে লেখা নকলের প্রিন্ট বের করেন। মোবাইল ফোনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাসায় তিনি মোবাইল ফোন রেখে এসেছেন বলে জানান। কিন্তু তার নম্বরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফোন করলে পাশের ব্যাগের মধ্যে সেটি বেজে ওঠে। সে সময় মোবাইল ফোনে প্যাটার্ন লক ছিলো। ওই শিক্ষককে লকটি খুলতে বললে তিনি তাৎক্ষণিক মোবাইল থেকে কিছু একটা ডিলিট করে দেয়ার চেষ্টা করেন। পরে তার মোবাইল ফোন তল্লাশি করে হোয়াটসঅ্যাপে শ্রেণিকক্ষের বাইরে উদ্ধার করা হাতে লেখা নকলের হুবহু ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলাম জানান, তার এক ছাত্র এগুলো সমাধান করে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়েছেন। পরে তিনি কেন্দ্রের প্রিন্টারে প্রিন্ট করে রুমে রুমে নকল সরবরাহ করেছেন।
ইউএনও মো. ইয়াসির আরাফাত জানান, দোষ স্বীকার করায় আইন অনুযায়ী রাজাপুরা আল আমিন ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. ছায়েদুল ইসলামকে এক হাজার টাকা অর্থদণ্ড ও দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
