
মহিলা অধিদপ্তরের কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্প নিয়ে অসংখ্য অনিয়মের অভিযোগ মিলছে। সারাদেশের সাড়ে ৪ লাখ কিশোর-কিশোরী এসব ক্লাবে সংস্কৃতি চর্চা করার কথা ছিল। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১০টিরও বেশি ক্লাব ঘুরে দেখা যায় ক্লাব সদস্যরা সরকারের বরাদ্দ নাস্তার তিনভাগের মাত্র একভাগ পায়।
মহিলা অধিদপ্তর কিশোর-কিশোরীদের সাংস্কৃতিক বিকাশ, বাল্য বিয়ে রোধ, গান-আবৃত্তি শেখানোর জন্য ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। ওই প্রকল্প অনুযায়ী দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় চার হাজার ৮শ’ ৮৩টি ক্লাব স্থাপন করা হয়। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকা। প্রতিটি ইউনিয়ন আর পৌরসভার একটি স্কুলে সপ্তাহে শুক্র-শনি ৩০ জন কিশোর-কিশোরীকে এই ক্লাবে সাংস্কৃতিক নানা বিষয় শেখানোর কথা। প্রতিটি ক্লাবের জন্য একটি হারমোনিয়াম, তবলা, ক্যারাম, লুডু দাবাসহ পাঁচ হাজার টাকার বই ও সাময়িকী দেয়া হয়। গান-আবৃত্তি শেখানোর জন্য আছে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক। প্রতি পাঁচ ক্লাবের জন্য একজন জেন্ডার প্রোমোটর। জেলার দায়িত্বে একজন ফিল্ড সুপারভাইজার। ক্লাব বেশি হলে সুপারভাইজার সংখ্যা জেলায় দু’জনও দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে দৌলতপুরের ১০টি ইউনিয়নের সব জায়গাতেই প্রকল্পের কাগজে ও বাস্তবের ব্যাপক গড়মিল দেখা যায়।
জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি ক্লাবে ৩৫ জনকে ৩০ টাকা করে নাশতার জন্য পাঠানো হয়। অর্থাৎ ১৪টি ক্লাবের একদিনের নাস্তার খরচ হয় ১৪ হাজার ৭শত টাকারও বেশি। আর মাসে ৮ দিনের নাস্তার জন্য দেয়া হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৬শ টাকা। জেলার ফিল্ড সুপারভাইজারের দাবি নাস্তার জন্য দেয়া হয় ২০ টাকা। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকরা বলছেন নাস্তা দেয়া হয় ১৫ টাকার। শুক্র-শনি বেলা ৩-৫টা পর্যন্ত ক্লাব চালু থাকার কথা আর যেগুলো খোলা আছে তাতে কাগজে কলমে ৩০ জনের নাম থাকলে বাস্তবে উপস্থিত খুবই কম। এমনকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনের কেক কেনার জন্য সরকারি বরাদ্দ ছিল ১১শ টাকা, কিন্তু অফিস থেকে যে কেক দেওয়া হয়েছে তা এতোটাই ছোট ছিল যে তা ৩০ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া ছিল অনম্ভব।
এ বিসয়ে উপজেলার মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা জানান, সরকারি টাকা যেটুকু বরাদ্দ হয় তা থেকে ভ্যাট ট্যাক্স কেটে নেওয়ার পরে যা থাকে তাই দিয়ে নাস্তা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি, তবে বিষয়গুলো ক্ষতিয়ে দেখে এর সমাধান করা হবে।