দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী হিলি অঞ্চলে দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব। গ্রাম থেকে গ্রামে দ্রুত রোগ ছড়িয়ে পড়ায় এবং শত শত গরু আক্রান্ত হওয়ায় খামারি ও কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
খামারিরা অভিযোগ করছেন, মশা-মাছির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে প্রাণঘাতী ল্যাম্পি স্কিন রোগ। আর সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে গরু।
প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসাবে, দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় প্রায় ৬৫ হাজার গবাদি পশু রয়েছে। এর মধ্যে লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হয়েছে চারশোর ওপরে। আর এরি মধ্যে মারা গেছে আটটি গরু।
খামারি লুৎফর রহমান বলেন, মারাত্মক এ রোগ প্রতিরোধে পশু চিকিৎসকরা গাঁট পক্স ভ্যাকসিন দিচ্ছেন। কিন্তু তাতেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না।
সঠিক ভ্যাকসিন না থাকায় খামারিরা বিপাকে পড়ছেন বলেও জানান তিনি।
এদিকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে দুটি গরু কিনেছিলেন মোল্লা বাজারের করিম উদ্দিন। এর মধ্যে কয়েকদিন লাম্পি স্কিনের উপসর্গ নিয়ে ভোগার পর একটি গরু মারা গেছেন।
ঋণের কিস্তি কীভাবে পরিশোধ করবেন তা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত করিম বলেন, কয়েকদিন ধরেই একটির গরুর শরীরে রোগ দেখা দিয়েছিল। সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় রোববার আমার একটি গরু মারা গেছে।
আর চুরিপট্টি এলাকার বাবুর খামারেও রোববার একটি গরু মারা গেছে।
‘গরুর রোগ হয়েছে, কিন্তু চিকিৎসা পাইনি,’ অভিযোগ করেন ওই খামারি।
তবে হাকিমপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর কর্মকর্তা কাজী মাহবুবুর রহমান দাবি করেছেন, ‘খামারিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সারা দেশের মতো হাকিমপুর উপজেলাতেও লাম্পি স্কিন রোগের আবির্ভাব ঘটেছে। রোগ নিয়ন্ত্রণে মাঠে আমাদের টিম কাজ করছে।
ভাইরাসজনিত লাম্পি স্কিন রোগ বাংলাদেশে প্রথম চট্টগ্রামে দেখা দেয় ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি। এরপর রোগটি ওই বছরের শেষের দিকে কুড়িগ্রাম দেখা দেয়।