
কয়লাসঙ্কটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধের শঙ্কায় পটুয়াখালীতে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, ডলার সঙ্কটের কারণে কয়লার বিল বাবদ গত ৯ মাসে কেন্দ্রটির বকেয়া জমেছে প্রায় ২৯৮ মিলিয়ন ডলার বা তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা। বকেয়া পরিশোধ না করায় চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনকে (সিএমসি)। বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে বর্তমানে যে পরিমাণ কয়লা মজুদ রয়েছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ দিন চলবে। যদি এর মধ্যে বকেয়া পরিশোধ করে কয়লা আমদানি করতে না পারে, তাহলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিটই বন্ধ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, দেশের বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে দেশ আবারও লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে যাবে।
কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কম্পানি লিমিটেডের (বিসিপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ এম খোরশেদুল আলম গত রোববার রাতে বলেন, ‘বকেয়া জমার কারণে দুই-তিন দিন আগে তারা (চীনের বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ) আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বকেয়া বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত তারা আর কয়লা দেবে না। আমরা বিষয়টি জ্বালানি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছি। বর্তমানে যে কয়লা মজুদ রয়েছে তা দিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ দিন কেন্দ্রটি চালু রাখা যাবে। এর মধ্যে যদি বকেয়া পরিশোধ করে কয়লা আমদানি করা না যায়, তাহলে কেন্দ্রটি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাবে।’
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ২৭ মার্চ পর্যন্ত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার বকেয়া ওভারডিউ হয়েছে ২৯৮ মিলিয়ন বা প্রায় তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা। বাকির টাকা দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় চীনের মুদ্রা নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এর ফলে মে মাসে কয়লা আমদানির কোনো ঋণপত্র খুলতে পারবে না সিএমসি।