ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

বিবিধ

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৫ মে ২০২৩

সর্বশেষ

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়

বাঙালি শিক্ষাবিদ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা বিখ্যাত চিকিৎসক গঙ্গাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও মা জগত্তারিণী দেবী। 
আগাগোড়া মেধাবী ছাত্র আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। তিনি ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ডিগ্রি ও ১৮৮৫ খ্রিষ্টাব্দে গণিতে এমএ পাস করেন। এর পরের বছরে তিনি পদার্থবিদ্যায় এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ঈশান বৃত্তি লাভ করেন এবং ১৮৮৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রেমচাঁদ রায়চাঁদ বৃত্তি পিআরএস অর্জন করেন। 
আশুতোষ মুখোপাধ্যায় স্বাধীনচেতা মানুষ ছিলেন। তার জীবনের প্রধান লক্ষ্য ছিলো কলকাতা হাই কোর্টের বিচারক হওয়া। ১৮৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি বিএল ডিগ্রি লাভ করেন এবং তখন থেকেই আইন ব্যবসা শুরু করেন। 
ইন্ডিয়ান অ্যাসোশিয়েসন ফর দি কালটিভেশন অব সায়েন্স-এর সাথে তিনি সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং ১৮৮৭ থেকে ১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তিনি গণিতের ওপর একাধিক লেকচার প্রদান করেন। তার দুটি অসাধারণ অ্যাকাডেমিক অবদান হলো ১৮৯৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত জিওমেট্টি অব কোণিক্স এবং ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ল অব পারপিচুইটিস। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ক্যালকাটা ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ল’ এর ওপর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন এবং ১৮৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ট্যাগোর ল প্রফেসর হন। ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তার কাঙ্ক্ষিত কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতির পদে অধিষ্ঠিত হন।
এর আগে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ও ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দে এর সিন্ডিকেটের সদস্যের পদ অলংকৃত করেন। তিনি ১৮৯৯ থেকে ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নরের কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। ১৯০২ খ্রিষ্টাব্দে লর্ড কার্জন তাকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করেন। ১৯০৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ১৯২১ থেকে ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো উপাচার্যের পদে অধিষ্ঠিত হন। এ সময়েই তিনি কলা ও বিজ্ঞান শাখার পি.জি. কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট হন। ১৮৮৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকেই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটের সবচেয়ে প্রভাবশালী সদস্য ছিলেন। তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অণুপ্রেরণা। রাজনীতির সাথে জড়িত না হয়েই তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ্চাত্য ও জাতীয় শিক্ষার সুফলগুলি অত্যন্ত সফলতার সাথে সংযু্ক্ত করেন। এভাবে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক রেনেসাঁ ঘটিয়ে ফেলেন।
জাতীয় শিক্ষা কাউন্সিল কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে জাতীয়তাবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হলেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয় অভিষ্ঠ লক্ষ্যে তাদের কাজকর্মে কোন অংশেই পিছিয়ে ছিলনা। তবে কারিগরি ও প্রযুক্তিবিদ্যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অবদান বেশি রাখছিল। তখন পর্যন্ত ঔপনিবেশিক প্রভাব থাকার কারণে আশুতোষ মুখার্জী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের চরিত্রে সম্পূর্ণ পরিবর্তন সূচিত করতে পারে নি।
আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা হাইকোর্ট ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে তিনি পাটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

জনপ্রিয়