পাকিস্তানের নতুন প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির ২৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন তিনি। ইসলামাবাদের আইওয়ান-ই-সদরে এক অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকার ও সেনাপ্রধান আসিম মুনিরও এসময় উপস্থিত ছিলেন। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
কে এই বিচারপতি ঈসা?
১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৬ অক্টোবর পাকিস্তানের কোয়েটায় জন্মগ্রহণ করেন বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসা। তিনি বেলুচিস্তানের পিশিন শহরের প্রয়াত কাজী মোহাম্মদ ঈসার ছেলে। বিচারপতি কাজী ফয়েজ ঈসার বাবা পাকিস্তান আন্দোলনের অগ্রভাগে ছিলেন এবং দেশটির প্রতিষ্ঠাতা কায়েদ-ই-আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন।
দ্য ডন বলছে, বিচারপতি ঈসার বাবা ছিলেন বেলুচিস্তান প্রদেশের প্রথম ব্যক্তি যিনি বার-অ্যাট-ল ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন এবং লন্ডন থেকে ফিরে আসার পর বেলুচিস্তানে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেন। তার বাবা বেলুচিস্তান থেকে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটির একমাত্র সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি
বিচারপতি ঈসার মা বেগম সাইদা ঈসা একজন সমাজকর্মী ছিলেন এবং শিক্ষা, শিশু ও নারীদের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো নিয়ে কাজ করে এমন হাসপাতাল ও অন্যান্য দাতব্য সংস্থার বোর্ডে সম্মানসূচক পদে কাজও করেছিলেন তিনি।
কোয়েটায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করার পর ইসা করাচিতে চলে যান এবং করাচি গ্রামার স্কুল (কেজিএস) থেকে তার ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল শেষ করেন। এরপর তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করতে লন্ডনে যান এবং সেখানে তিনি ইনস অব কোর্ট স্কুল ল থেকে বার প্রফেশনাল পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।
বিচারপতি ইসা ১৯৮৫ খ্র্রিষ্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি বেলুচিস্তান হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট এবং ১৯৯৮ খ্র্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হিসাবে নথিভুক্ত হন। তিনি পাকিস্তানের হাইকোর্ট, ফেডারেল শরীয়ত আদালত এবং পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে ২৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে আইন প্রাকটিস করেছেন।
তিনি বেলুচিস্তান হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন, সিন্ধু হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন এবং পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য। বিভিন্ন সময়ে পাকিস্তানের হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট তাকে অ্যামিকাস কিউরি হিসাবে ডাকত এবং কিছু জটিল মামলায় তার সহায়তা গ্রহণ করত। তিনি আন্তর্জাতিক সালিশও পরিচালনা করেছেন।
বিচারপতি কাজী ফয়েজ ইসা ২০১৪ খ্র্রিষ্টাব্দের ৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন।