
বিতর্কিত আখ্যা দিয়ে নতুন কারিকুলাম বাতিলের দাবি জানিয়েছে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ। একই সঙ্গে মুসলিম শিক্ষার্থীদের জন্য ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করারও দাবি জানিয়েছে তারা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য পাওয়ার দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংঘঠনটির নেতারা। এ সময় কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ সভাপতি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে প্রচলিত বিতর্কিত করিকুলামে আমাদের ভবিষৎ প্রজন্ম ধর্মীয় মূল্যবোধ ও নৈতিক অবক্ষয়ের শিকার হবে। তাদের থেকে ইসলামিক মূল্যবোধ সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে যাবে। তাই হক্কানি উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে নতুন শিক্ষা কমিশন গঠন করে শিক্ষানীতি ও কারিকুলাম নতুন করে প্রণয়ন করা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, ব্রিটিশদের প্রবর্তিত কারিকুলামে মূল লক্ষই ছিলো ধর্মহীন কর্ম শিক্ষার মাধ্যমে জাতিকে ইসলাম শূন্য করা, তা বর্তমানে ৯৮ শতাংশ সফলভাবে কার্যকর হয়েছে। মুসলিম জাতিসত্ত্বা আজ হুমকির সম্মুখীন। এমন পরিস্থিতিতে দেশের প্রত্যেক গ্রামে পাড়া মহল্লায় মক্তব মাদরাসা কায়েম করে মুসলমান সন্তানদের বাল্যকালেই দ্বীনি শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। নতুবা ৯২ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে আমাদের সন্তানেরা নাস্তিক্যবাদী শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্নের কারণ হবে।
ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিত না হলে বিভিন্ন মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে ইসলামের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফিলিন্তিনের গাজা, রাফায় মজলুম মুসলমানদের চরম মানবিক দুর্ভোগে ইসলামি মূল্যবোধের চেতনায় মুসলমানদের করণীয় সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
কোরবানির পশুর চামরা সম্পর্কে কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ নেতারা বলেন, দেশে চামড়াজাত পণ্যের দামের তুলনায় চামড়ার দাম একেবারেই নগন্য। যার কারণে চামড়ার দাম কমে যাওয়ার ফলে গোস্তের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, চামড়ার তৈরি পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী। এক জোড়া জুতা কিংবা একটি চামড়ার ভ্যানিটি ব্যাগের কমপক্ষে মূল্য যেখানে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকার অধিক, সেখানে একটি গরুর চামড়ার দাম মাত্র ৪০০-৫০০ টাকা এবং একটি ছাগলের চামড়ার তো কোনো মূল্যই নেই। যে চামড়ার দিয়ে এতো দামি পণ্য তৈরি হয় সেই চামড়ার মূল্য এতো কম কেনো?
নেতারা আরো বলেন, এখানে মধ্যসত্ত্বভোগী সিন্ডিকেট দায়ী। এর ফলে স্পষ্টতই প্রমাণিত হয় যে, দেশী-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারী সিন্ডিকেট চামড়ার অবমূল্যায়নের সঙ্গে জড়িত।
এনজিওদের অপতৎপরতারোধের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, যে সব অঞ্চলে খ্রিস্টান এনজিও ও মিশনারি সেবার নামে খ্রিস্টান বানানোর অপতৎপরতায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে, অবিলম্বে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। ওই সব স্থানে ইসলামি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অথবা অনুমোদিত মুসলিম এনজিওদের মাধ্যমে দ্বীনি শিক্ষা ও দাওয়াতের মেহনতের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।